- বিশেষ প্রতিনিধি::
- আগামী ১৩ অক্টোবর মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গলে উপজেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলে সভাপতি পদ প্রত্যাশি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আছকির মিয়া। তিনি বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। ১৯৬৮সালে এসএসসি পাস করে মৌলভীবাজার কলেজে ছাত্রলীগে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ৬৯ সালে উপজেলার ফুলছড়া মোহাজেরাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকুরীতে যোগ দেন। চাকুরীরত অবস্থায় দেশব্যাপী গণ অভ্যুত্থান শুরু হলে তিনি সে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ৭০সালে ভূনবীর ইউনিয়নে সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন। ৭১সালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে জাতিক জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৭ই মার্চের ভাষণে ছয়তারা টুপি মাথায় বাঁশের লাঠি নিয়ে সেখানে সেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৭১ সালে ২৫ শে মার্চ কালোরাত্রিতে বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে হৃদয় বিদারক ঘটনার পর ২৬ শে মার্চ থেকে স্থাণীয়ভাবে সংঘঠিত হয়ে প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসাবে পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। কিছুদিন প্রতিরোধের পর পাকিস্তানীরা মানুষ হত্যার শুরু করে। তখন ভারতের খোয়াই অঞ্চলে আশ্রয় নেন। সেখানে মুজিব বাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে সল্প ট্রেনিং নিয়ে ৭১ এর আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় বেইজ ক্যাম্প সৃষ্ঠি করেন। মুজিব বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে চোরাগুপ্তা হামলা চালান। বেইজ ক্যাম্পে মুজিব বাহিনীর প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবে তার সঙ্গে যারা ছিলেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মৃত মো.মছদ্দর আলীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আব্দুল মুকিত একই উপজেলার মৃত কিরণ মনি করের ছেলে কৃপেশ রঞ্জণ কর রানু একই উপজেলার বর্ষিজোরা গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে আব্দুস শহীদ,শ্রীমঙ্গল উপজেলার মৃত সুধীর কুমার সোম এর ছেলে সমীর সোম,রাজনগর উপজেলার টেংরা গ্রামের মৃত সারধা চন্দ্র দেব এর ছেলে সুদর্শন দেব,কুলাউড়া উপজেলার বটুলী গ্রামের মৃত সুরেশ চন্দ্র পালের ছেলে সুখময় পাল যুদ্ধকালীন সময়ে গেরিলা যুদ্ধা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শহীদ হন।
৭১ সালের ৬ই ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গল থানা শত্রু মুক্ত হলে উপজেলার ভ’নবীর ইউনিয়নের বাদেআলিশা গ্রামে গঙ্গেশ রঞ্জণ দেব রায়ের বাড়িতে অস্থায়ী ক্যাম্প করেন। সেখানে তার নেতৃত্বে স্থানীয়ভাবে শান্তি শৃঙ্খলার চেষ্টা চালান। ১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে অস্ত্র সমর্পন করে প্রত্যেকে যার যার কাজে যোগদান করার আহবান জানালে ৩০ জানুয়ারী সিলেট শহরের রেজিষ্টারী মাঠে তৎকালীন মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজীর নিকট মুজিব বাহিনীর অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে অস্ত্র সমর্পন করেন। ১৯৭২ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে পূনরায় পূর্বের পেশায় প্রাইমারী বিদ্যালয়ে যোগ দেন। ৭৩ সালে পিটিআই প্রশিক্ষণ শেষ করেন। ৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপরিবারে নিহত হবার পর শিক্ষাকতা চাকুরী ত্যাগ করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ৭৬সালে ভূনবীর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। সে সময়ে তাকে তৎকালীন সরকারের রুশানলে পড়ে একাধিকবার কারাগারে যেতে হয়। ৮৫ সালে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ৮৬ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার জাতীয় পার্টির কার্যকরি কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হন। ৮৭ সালে নারী শিক্ষা প্রসারে শ্রীমঙ্গল শহরে তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
৯৬ সালে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নিযুক্ত হন। ২০০১ সালে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। পরবর্তীতে ২০০২ সালে জুলাই মাসে তার অনুসারী আড়াইশ জন নেতাকর্মী নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। ২০০৫ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরি কমিটির সহসভাপতি নিযুক্ত হন। পরবর্তী ২০১৮ সালের মে মাস হতে শ্রীমঙ্গল উপজেলার আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
শ্রীমঙ্গলে উপজেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলে সভাপতি পদ প্রত্যাশি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আছকির মিয়া
শেয়ার করুন