অনুপ্রবেশকারীকে আওয়ামী পরিবারে স্থান না দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন-১৫ বছর পর আগামী ৯ নভেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলা আ’লীগ সম্মেলন

  • মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
    দীর্ঘ ১৫ বছর পর আগামী ৯ নভেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে সামনে রেখে দ্বিধা বিভক্ত দলের ডজন খানেক নেতারা পদ-পদবী পেতে তৎপর। তবে দল থেকে পদত্যাগ করা ও বিএনপিতে যোগ দেয়া এক ইউপি চেয়ারম্যানকে আ’লীগ পরিবারে ঠাঁই না দিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আবেদন জানানো হয়েছে।
  • গত ২৮ অক্টোবর ডাকযোগে উপজেলা আ’লীগের সদস্য আব্দুল গফুর প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন প্রেরণ করেন।
  • প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া আবেদন সূত্রে জানা যায়, শমসেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ ২০১৪ সনের ৪ঠা আগষ্ট শমসেরনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে লিখিতভাবে পদত্যাগ করেন। একদিন পর ৬ আগষ্ট পাঁচ টাকা চাঁদার রশিদ কেটে শমসেরনগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সদস্য হন।
    কমলগঞ্জ উপজেলা আ”লীগের আসন্ন সম্মেলনে ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ সম্ভাব্য সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয়ভাবে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগপত্র দেয়ার সত্যতা স্বীকার করে কমলগঞ্জ উপজেলা আ”লীগের সদস্য, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, জুয়েল আহমদ দল থেকে পদত্যাগ করে বিএনপিতে যোগদান করেন। যোগদানের ঐ রশিদটি এখন অনেকটাই ভাইরাল। এ নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী বরাবরে ডাকযোগে লিখিত অভিযোগে অনুপ্রবেশকারীকে আওয়ামী পরিবারে ঠাঁই না দিতে আবেদন জানিয়েছি। যার অনুলিপি মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে প্রদান করা হয়েছে।
    এ ব্যাপারে শমসেরনগর ইউনিয়ন বিএনপি’র আহ্বায়ক আব্দুল মুহিত বলেন, জুয়েল আহমদ এক সময়ে বিএনপি’র সদস্য হয়েছিলেন। তবে বিষয়টি এখন ঠিক মনে নেই। অভিযোগ বিষয়ে শমসেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, একটি মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে স্বীয় স্বার্থ হাসিলে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। আমি আ’লীগ থেকে পদত্যাগ করিনি এবং বিএনপিতেও যাইনি। আ’লীগ ছাড়াও জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি বলে দাবি করেন।
    উপজেলা আ’লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ আগষ্ট জেলা আ’লীগের সভাপতি নেছার আহমদ এমপি’র উপস্থিতিতে পুলিশি নিরাপত্তায় কমলগঞ্জ উপজেলা কমিটির বর্ধিত সভায় উপজেলা আ’লীগের সহসভাপতি আলীনগর ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক বাদশাকে আহ্বায়ক এবং যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দেক আলীকে সদস্য সচিব করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠিত হয়। ২০০৪ সালে উপজেলা আ’লীগের কাউন্সিলে বেলায়েত আলীকে সভাপতি নির্বাচিত করা হলে ২০১১ সালে তাঁর মৃত্যুর পর স্থানীয় সংসদ সদস্য এম.এ.শহীদ এর ছোট ভাই মোসাদ্দেক আহমদকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়। সে সময় থেকেই উপজেলা আ’লীগে দ্বিধা বিভক্তি দেখা দেয়। দ্বিধাবিভক্ত উপজেলা আ’লীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে কারা হচ্ছেন প্রার্থী এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে এক ডজন ব্যক্তির নাম শুনা যাচ্ছে।
    উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমদ বুধবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিং এ দলের নিবেদিত নেতাকর্মীদের ঠাঁই হবে দাবি করে বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর বিরোধী দলে থাকাকালীন সময় থেকে দৃঢ়তার সহিত আমরা দলের দায়িত্ব পালন করি। তবে নানা কারণে দলের সম্মেলন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। কাজের মূল্যায়নে সফলতা দাবি করে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসাবে নিজের নাম ঘোষণা করেন।
    অনুপ্রবেশকারী উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি নেছার আহমদ এমপি বলেন, বিষয়টি আমরা দেখবো।
শেয়ার করুন