- মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ::
- কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নে ৭ম শ্রেণির স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ। বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিন ঘটনাস্থল ও নির্যাতনে শিকার স্কুলছাত্রীর বাড়ি পরিদর্শন করেন। তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষিতার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর দিনই ঘটনাস্থলে ছুটে যান এ পুলিশ কর্তকর্তা।
- ধর্ষণে শিকার স্কুলছাত্রীর পরিবারের সাথে ঘটনা সংক্রন্ত একাধিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন জেলা পুলিশ সুপার।
- এদিকে ভাটেরা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা ৩ দফা দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে ঘটনাস্থল পরির্দশনের আগে গত মঙ্গলবার তিনি মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর সাথে কথা বলেন।
- এদিকে ২৪ ঘণ্টার ভেতরে ঘটনার প্রধান আসামী আনিছ মিয়া (৩২) কে গ্রেফতার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে আল্টিমেটাম দিয়ে সোমবার ২৮ অক্টোবর সকাল ১১ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ভাটেরা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ। তবে আল্টিমেটামের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর আন্দোলনকারী আগামী সোমবারের মধ্যে ৩ দফা দাবি জানিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে। আর তা হলো- ধর্ষণের ঘটনার সাথে জড়িত মুল আসামী আনিছ মিয়াকে গ্রেফতার, দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ প্রত্যাহার করে ধর্ষণের মামলা গ্রহণ। আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা রাজপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে।
- ভাটেরা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সিাপার উদ্দিন আহমদ জানান, গত ৩০ অক্টোবর ভাটেরা স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্দে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে চিঠি দেয়া হবে।
- তদন্ত ও সার্বিক বিষয় মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান- আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখি। তদন্তের দিকে একটু সময় দেই।’
- উল্লেখ্য, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ৭ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে দক্ষিণভাগ গ্রামের সোনা মিয়া মহরির ছেলে আনিছ মিয়া (৩২) ও ভবানীপুর গ্রামের সোনা মিয়া ওরফে মেলেটারির ছেলে সানু মিয়া (৩৫) মিলে জোরপূর্বক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে রাবার বাগানের নির্জন স্থানে ধর্ষণ করে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সানু মিয়া (৩৫) নামক এক যুবককে আটক করেছে।
- এ ঘটনায় কুলাউড়া থানায় রেকর্ড হওয়া মামলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ধর্ষণে শিকার স্কুলছাত্রীর পরিবার। ভিকটিম স্পষ্ট ধর্ষণের বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার জানালেও রহস্যজনক কারণে ‘ধর্ষণের চেষ্টা’ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। সেখানে তিন পুলিশ সদস্য স্কুলছাত্রীকে মানসিক চাপ প্রয়োগ করে বক্তব্য বদল করে মামলা রেকর্ড করান মর্মে দাবী করে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয় ধর্ষণে শিকার স্কুলছাত্রী।
- অভিযোগ পত্রে স্কুলছাত্রী উল্লেখ করে- ‘থানায় থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে বাদল দারোগা (এসআই), সনক দারোগা (এসআই), কনস্টেবল রোজীনা তকে নানা সময় ভয় দেখিয়ে বলে – ধর্ষণের কথা বললে তার জেল-ফাঁসি হবে। গভীর রাতে আরেক অফিসার তার কাছে গিয়ে জবানবন্দি নেন এবং তাকে না জানিয়ে তা রেকর্ড করেন। থানায় এমনভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে, সে সত্য কথা তখন বলতে পারেনি।’
কুলাউড়ায় ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষিতার অভিযোগ; তদন্তে মাঠে এসপি
শেয়ার করুন