বিয়ানীবাজার মুড়িয়া হাওর অঞ্চলে ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাঁসি


মোঃ ইবাদুর রহমান জাকিরঃ 

সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া হাওরে মোট আট বর্গকিলোমিটার ভূমি রয়েছে, এ অঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার ৭৯ হেক্টর জমি চাষাবাদ করা হয়, ধানের বাম্পার ফলন বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া, দুবাগ, শেওলা এবং কুড়ার বাজার এই ৪টি ইউনিয়ন জুড়ে মুড়িয়া হাওরের অবস্থান। মুড়িয়া হাওরে বেশ কয়েকটি বিল রয়েছে, রয়েছে ভিন্ন প্রজাতির পাখির কলতান। বড় বড় মাছের নিরাপদ বাসস্থান এই মুড়িয়ার বিল। চতুর্দিকে রয়েছে ফসলি জমি।

প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে অনেক সময় মুড়িয়ার হাওরে ফসল হয় না, যার মধ্যে খরা ও বন্যা’ই প্রধান সমস্যা। কিন্তু, এ বছর সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম, সময় সময় বৃষ্টি হওয়ায় হাওরের উপরিভাগে খুব ভালো ধানের ফলন হয়েছে। আশানুরোপ ফলন ঘরে নিয়ে আসার সম্ভাবনায় দুবাগ ইউনিয়নের কৃষক মকসুদ আহমদ কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সরকার যদি মুড়িয়া হাওরের ছোট ছোট খাল গুলো খনন করে গভীর নলকূপ স্থাপন করতো তাহলে আমন ধানের জমি গুলিও বরো মৌসুমে চাষাবাদ করা যেত, তবে এই বছর আবহাওয়া ভালো, আমরা জমি চাষাবাদ করেছি ও ফসলের পরিচর্যা করেছি সময় সময় বৃষ্টি হওয়ার কারণে ধানে ভালো মুকুল দিচ্ছে।

শেওলা ইউনিয়নের কৃষক আবুল কালাম কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সরকার মুড়িয়া হাওরে যে বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে তা যদি বাস্তবায়ন করতো তাহলে বুরো, আমন ধান আরো বেশী চাষাবাদ হতো, আমি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সিলেট-৬ আসনের (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) এমপি, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মোঃনুরুল ইসলাম নাহিদ মহোদয়ের কাছে দাবী জানাচ্ছি, দ্রুত মুড়িয়া হাওর উন্নয়ণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার ব্যাবস্থা করুন। আমরা কৃষকগণ বাজার থেকে কিনে নিয়ে এসে উচ্চ ফলনশীল বীজ রোপন করেছি আশাকরি ভাল ফলন পাবো। মুড়িয়া ইউনিয়নের কৃষক পূর্ব মুড়িয়া নওয়াগ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিস আলীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় সুনাই নদীর ভাঙ্গনে জমি বিলীন হতে যাচ্ছে, অপর দিকে ভারতে দখল করে নিচ্ছে জমি, আমাদের গ্রামের যে পরিমাণ জমি আছে সে পরিমান জমির ফসল যদি আমরা যদি সঠিক ভাবে উত্তোলণ করতে পারতাম, তাহলে খাদ্যে অভাব দেখা দিতো না। সারপার জিসি নওয়াগ্রাম বর্ডার গার্ড টু গজুকাটা সেওলা সেতু রোডের মধ্যখানে বক্স কালর্ভাট গুলোতে যদি সুইচ গেইট স্থাপন করা হতো তাহলে ভারত থেকে আসা পানি আমাদের ফসলি জমির ফসল নষ্ট করতে পারতো না, পরিমাণ মতো পানি সেচে বুরো মৌসুমেও সব জমি আবাদ করা যেতো। তবে এই বছর রোগ বালাই ও বড় বন্যা না থাকায় ধানের ভালো ফলনের আশাবাদী।

মুড়িয়া হাওর অঞ্চলের কৃষকরা যে সব ধানের চাষাবাদ করছেন তা হলোঃ রন্তিত, বাদাল, বিরইন, ইরি২৯, ইরি২২, ইরি২৮, চিনি গুড়া, কাটরি, জড়িয়া, পাইজন ইত্যাদি।

শেয়ার করুন