মোঃ ইবাদুর রহমান জাকির, বড়লেখা প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখার পাথারিয়া পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত দেশের সর্ব বৃহৎ জলপ্রপাত ও পিকনিক স্পট মাধবকুণ্ডের পানিতে দুর্বৃত্তরা বিষ প্রয়োগ করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী নিধন করে। পঁচা মাছের দুর্গন্ধে গত ক’দিন ধরে জলপ্রপাত ও ইকোপার্ক এলাকার পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে।
পানি ও আশপাশের বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে যার কারণে আগত পর্যটকরা আনন্দ উপভোগ না করেই স্ব গন্তব্যে ফিরে যাচ্ছেন। পাহাড়ি লতা জাতীয় বিষপ্রয়োগের ফলেই মাছ ও জলজ প্রাণী মরে যাচ্ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, মাছ শিকার করতে অসাধু কুচক্রিমহল এই আমানবিক কাজটি করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
জানা যায়, পাথারিয়া পাহাড়ের ওপরের বিভিন্ন ছড়ার ছুয়া পানির মোহনা একত্রিত হয়ে গড়িয়ে নিচে পড়ায় মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও নিচে গভীর জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ জলাশয়ের পানি মাধবছড়া নাম (ছোট নদী) নিয়ে নিচের দিকে প্রবাহিত হয়ে পতিত হয়েছে বাংলাদেশের বড় হাওর হাকালুকিতে। জলপ্রপাতের নিচের জলাশয় ও ছড়ায় বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ ও জলজ প্রাণীর নিরাপদ বাসস্থান।
প্রথমে স্থানীয় আদিবাসী খাসিয়া ও ইকোপার্কের কর্মীরা জলপ্রপাতের পানিতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, ব্যাঙ, কুচিয়া, কাকড়াসহ জলজ প্রাণী মরে ভেসে থাকতে দেখতে পান, বাতাসে ভেসে আসে দূর্গন্ধ, পরে
জলপ্রাতের মূল স্পটের পানিতে বিভিন্ন প্রজাতির মরা মাছ ব্যাঙ ভেসে থাকতে দেখা যায়। পরিস্কার পানির নিচে মরা মাছ, কাকড়া, ব্যাঙসহ নানা জলজ প্রাণী দেখা যায়।
ইকোপার্কের টিকেট কালেক্টর শামীর আহমদ, মাধবকুণ্ড পর্যটক সহায়ক ও উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন জানান, শনিবার সূর্য ওঠার পর থেকে মরা, পঁচা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দেখতে পাই। পর্যটন পুলিশ আমাদেরকে দিয়ে মরা মাছ গুলো তুলে অন্যত্র ফেলেছেন। পানিতে নেমে যেথায় সাঁতার কাটতো পর্যটকরা আনন্দ উপভোগ করতো সেথায় পানিতে দূর্গন্ধ, এই অবস্থার পরিত্রাণ পেতে অনেক সময় লাগতে পারে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ থেকে পর্যটকরা দীর্ঘদিন হয়তো বঞ্চিত থাকতে পারে। মরা পঁচা মাছ ভেসে থাকা দেখেই বন বিভাগকে আমি জানাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আবু ফয়সল মো. ফয়সল আতিক (মাধবকুণ্ড পর্যটন পুলিশের ইন্সপেক্টর) বিষয়টা জানান, একযুগ–দুইযুগ আগের বড় বড় মাছে নিধন করছে কুচক্রী মহল বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে। মাধবকুণ্ডের জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ে আছে এই কুচক্রী মহলের কারণে। এই মহলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান প্রকৃতিপ্রেমি জনতা।
এই রিপোট লেখা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে উপজেলার একজন মৎস্য কর্তকর্তা, একজন স্টাফ পানি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, কেমিক্যাল জাতীয় দ্রব্য নয়, পাহাড়ি (বিষ লত) এক জাতীয় লতা প্রয়োগে মাছ ও জলজপ্রাণী মারা গেছে, তবে উপজেলা মৎস্য অফিস জানিয়েছে আগামী মঙ্গলবার পানির স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সেখানে ঔষধ প্রয়োগ করা হবে।