তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কমলগঞ্জে ছুরিকাঘাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গুরুতর আহত – আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ

  • মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
    মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন। আশংকাজনক অবস্থায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহেদুল আলম (৩৭)কে সিলেট থেকে এয়ার এ্যাস্বুলেন্সে করে (শুক্রবার রাতে) ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
    এর আগের দিন বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় কমলগঞ্জ উপজেলা চৌমুহনা এলাকায় তাকে ছুরিকাঘাত কে বা কারা।
    এদিকে শনিবার দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের একদিন আগে এই ঘটনায় এলাকায় আতংক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
    আহত শাহেদুল আলম কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সদস্য কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমানের ভাগ্না।
    প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে কমলগঞ্জ সরকারী গণ-মহাবিদ্যালয়ের একটি ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় কমলগঞ্জ উপজেলা চৌমুহনায় উপজেলা ছাত্রলীগ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সদস্য সচিব শাহেদুল আলমকে পৌর এলাকার নছরতপুর এলাকার শওকত মিয়ার ছেলে সরকারী গণ-মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র সাকের মিয়া ও তার কয়েক সহযোগিসহ উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
    পরে স্থানীয় দ্রুত গুরুতর আহত অবস্থায় শাহেদকে উদ্ধার করে প্রথমে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা করে আশংঙ্কা জনক অবস্থায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দ্র্রুত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যারাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। আভ্যন্তরিন গ্রুপিং-এর দ্বন্দে এ ঘটনা ঘটেছে।
    স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রুপিং এর দ্বন্দের জের ধরে বৃহস্পতিবার কমলগঞ্জ সরকারি গণ-মহাবিদ্যালয়ে শ্রীমঙ্গলের এক ছাত্রলীগ কর্মীর সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাটি ছাত্রলীগ নেতাদের হস্তক্ষেপে সমাধানও হয়। এ ঘটনার জের ধরে ওইদিন দুপুর ১টায় উপজেলা চৌমুহনায় উপজেলা সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সদস্য সচিব শাহেদুল আলম ও তার সহযোগিদের হামলায় আহত হন কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী মুহিত হাসান (১৯)। এসময় তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসলে ছাত্রলীগ কর্মী জাকের, সাকিল ও ইমন এর ওপরও তারা হামলা করেন। আহত মুহিত হাসানকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।
    বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রতিপক্ষ নছরতরপুর গ্রামের শওকত মিয়ার ছেলে সাকেরের ছুরিকাঘাতে গুরুতরভাবে আহত হন কমলগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সদস্য সচিব শাহেদুল আলম (৩৭)। বর্তমানে ঢাকা গ্রীন লাইফ হাসপাতালে শাহেদুল আলমকে ভর্তি করা হয়েছে।
  • এঘটনার প্রতিবাদে সাহেদুল আলমের সহযোগিরা বৃহস্পতিবার রাতে কমলগঞ্জ উপজেলা চৌমুহনায় সাকেরের চাচা কালাম মিয়া ও সালাম মিয়ার মোদি দোকানে ভাঙচুর করে এবং ছাত্রলীগ কর্মী সাফি ও সাজ্জাদ আহমদ এর পিতা আছলম মিয়া (৪৮) এর উপর হামলা চালিয়ে আহত করে। আহত আছলম মিয়াকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
    জানতে চাইলে কমলগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সদস্য আনোয়ার পারভেজ আলাল বলেন, তিনি মারধর থামাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। শ্রীমঙ্গল থেকে আগত এক ছাত্রকে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কমলগঞ্জ সরকারি গণ-মহাবিদ্যালয়ে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও দুপুরে উপজেলা চৌমুহনা এলাকায় মারধরের সত্যতা তিনি নিশ্চিত করেন। তিনি আরও বলেন, আহত উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক শাহেদুল আলমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা করা হয়েছে। তার প্রচুর পরিমাণে রক্ত দিতে হয়েছে। তাছাড়া ছাত্রলীগের সাাবেক সম্পাদককে হামলায় স্থানীয়ভাবে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলেও তিনি জানান।
    কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ হয়নি। স্থানীয়ভাবে উত্তেজনার কথা ভেবেই পরিস্থিতি পুলিশ নিয়ন্ত্রনে রেখেছে বলেও তিনি জানান।
    এদিকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা কমলগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক শাহেদুল আলম এর জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন শাহেদুল আলমের মামা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান। এদিকে শাহেদুল আলম এর দ্রুত সুস্থতা কামনা করে শুক্রবার কমলগঞ্জের বিভিন্ন মসজিদের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
শেয়ার করুন