ডেস্ক রিপোর্ট.
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগের দুর্ঘটনাস্থলে লাকসাম ও আখাউড়া থেকে যাওয়া দু’টি রিলিফ ট্রেন পৌঁছেছে। দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া বগি সরানো ও উদ্ধার কাজ চলছে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল পৌনে ৯টার দিকে ট্রেন দু’টি উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উদ্ধার কাজ শেষ হতে কতক্ষণ লাগবে সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিতভাবে কিছু জানাতে পারেননি। দুর্ঘটনার পর ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
সোমবার রাত ৩টার দিকে কসবার মন্দবাগে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ও ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৬ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মন্দবাগ রেলস্টেশনে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনটি মন্দবাগ রেলস্টেশন এলাকা অতিক্রম করছিল। এসময় একই লাইনে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রবেশ করে। ফলে দু’টি ট্রনের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এসময় উদয়ন এক্সপ্রেসের ৩টি বগি দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তবে তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের বগি ছাড়া অক্ষত রয়েছে সব বগি।
ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ করছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, আখাউড়া, কসবা এবং কুমিল্লা থেকে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের মোট চারটি ইউনিট। এছাড়া পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা উদ্ধার কাজ করছেন।
আহতদের মধ্যে অন্তত ৪০ জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।এখনও নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়ত উদ দৌলা খান জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিতু মরিয়মকে প্রধান করে ৩ সদ্যসের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা মঙ্গলবার বিকালে প্রতিবেদন জমা দেবেন। এছাড়া রেলওয়ের পক্ষ থেকে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
তিনি আরও জানান, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দাফন করার জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা সরকারিভাবে নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১১ জনের লাশ কসবা বায়েক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে রাখা হয়েছে। বাকি পাঁচজনের মধ্যে ৩ জনের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল, একজনের লাশ কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে এবং আরেকজনের লাশ কুমিল্লা মেডিক্যালে নেওয়া হয়েছে।