আলোচিত শাবাব-মাহি হত্যা’র ২ বছর : নিরাপত্তা চেয়ে নিহত শাহবাবের মায়ের জিডি

 

স্টাফ রিপোর্টার.

মৌলভীবাজার শহরে আলোচিত শাবাব-মাহি হত্যা মামলাটি এখনো কোন কূল-কিনারায় পৌঁছায়নি। বাদীনির নারাজির প্রেক্ষিতে মামলাটি পিবিআই এখন তদন্ত করছে। আলোচিত এ জোড়া খুন’র ঘটনায় শাবাব’র পরিবার থেকে তার মা সেলিনা রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করলেও নিহত মাহির পক্ষ থেকে কেউ মামলা দায়ের করেননি।

নিহত শাবাবের মায়ের অভিযোগ আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরা-ফেরা করে তাদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। নিজের নিরাপত্তা চেয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় তিনি জিডি করেছেন। জিডিতে তিনি প্রতিপক্ষ আনিছুর রহমান তোষারসহ ৭ জনের নাম উল্যেখ করে বলেন, শাবাব হত্যা মামলার এ আসামীরা হাজতে থেকে পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পায়। এর পর থেকেই তারা মোটরসাইকেল যোগে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। তিনি তার ও তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারী থানায় (জিডি নং-৭১৬) জিডি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে নিরাপত্তার দাবী জানান।কান্নাবিজরিত কন্ঠে নিহত শাবাবের মা সেলিনা রহমান সম্প্রতি বলেন, তার পুত্র হত্যার মূল হোতা ফাহিম মোনতাছিরকে আইনের আওতায় না এনে চার্জশীট দেয় পুলিশ। সমস্ত চার্জশীট এলোমেলো শুনে আমি তাড়াহুড়ো করে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে এসে মামলার তদন্তভার পিবিআইতে পাঠাই। তিনি বলেন, মামলা তদন্তাধীন থাকা সত্ত্বেও আসামীরা আমাদের হুমকি দিচ্ছে। তারা কার আশ্রয়-পশ্রয়ে এতো বেপরোয়া হয়ে গেল? তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে পুত্র হত্যার বিচার দাবী করেন। শাবাব’র বাবা বয়োবৃদ্ধ আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, পুত্র হত্যা মামলার এখনো কোন সাড়া-শব্দ পাচ্ছিনা। আসামী পক্ষের লোকজন প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে বিদেশ পালিয়ে যাওয়া আসামীদের দেশে আনা ও যারা জামিনে আছে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ বিচারের দাবী করেন।

উলেখ্য,মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বয়ে চলা রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্র ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী শাবাব ও মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী নাহিদ আহমদ মাহিকে ছরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। লোমহর্ষক এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস মাঠে ওইদিন সন্ধ্যায়। ঘটনার পর শাবাব’র মা সেলিনা রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্যেখ করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় (মামলা নং-৩৬৩/১৭) হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে বাদীনীর নারাজির প্রেক্ষিতে মামলাটি পিবিআইতে প্রেরণ করেন আদালত। এর আগে ১২ আসামির মধ্যে ৩জন কে গ্রেফতার ও ১ আসামী আত্মসর্মপণ করে আদালতে। শাবাব মৌলভীবাজার শহরের পূরাতন হাসপাতাল সড়ক এলাকার আবুবক্কর সিদ্দিক ও সেলিনা রহমান’র কনিষ্ঠ পুত্র। মাহি সদর উপজেলার কনকপুর ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের বিল্লাল মিয়া ও জুলেখা বেগম’র পুত্র।

মৌলভীবাজার পিবিআই’র এডিশনাল এসপি নজরুল ইসলাম জানান, শাবাব হত্যা মামলাটির তদন্ত চলছে। ওই মামলা থেকে দুই আসামী বাদ পড়াতে বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে আবারো মামলার তদন্তের কাজ শুরু হয়। স্বাক্ষী-প্রমাণে যদি ওই দুজন দোষী হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়্ হবে।

শেয়ার করুন