মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কানাইঘাট আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সিরাজ

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ 

মিথ্যা তথ্য দিয়ে একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগে নবনির্বাচিত সাধারন সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম। ২৭ নভেম্বর (বুধবার) বিকেল ৩টায় কানাইঘাট উত্তর বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করে অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি সহ তার প্রয়াত পিতা মনোহর আলীকে জড়িয়ে সম্পাদক ডট কম নামে একটি অনলাইন পোর্টাল জগন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সংবাদ করেছে। এ নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ও দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

মতবিনিময় কালে অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কি না তা কানাইঘাটের মুক্তিযোদ্ধারা ভাল করে জানেন। যারা এমন সংবাদ প্রকাশে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছে তারাই রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির দূষর। তিনি আরো বলেন, সর্বজন শ্রদ্ধেয় তার প্রয়াত পিতা মনোহর আলী কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং তিনি মুসলিমলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময় তার পিতা মনোহর আলী বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারা বরন করেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আরো একবার পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলার অপরাধে তিনি সহ তার পিতা আটকও হয়েছিলেন। তার পিতা শান্তি কমিটির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। অথচ প্রকাশিত সংবাদে তার পিতা মনোহর আলীকে শান্তি কমিটির নেতা এবং আমাকে রাজাকার এবং ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যারা এধরনের অপপ্রচার করছে তারা কানাইঘাটের মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস জানে না।

আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি যদি রাজাকার হয়ে থাকেন তাহলে ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর মুজিবনগর সরকার তাকে কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ এবং ১৯৭২ সালে জানুয়ারী মাসে বঙ্গবন্ধু সরকার তাকে রিলিফ চেয়ারম্যান হিসাবে কি করে নিয়োগ প্রদান করনে। সংবাদে আমাকে জামায়াত-বিএনপি ও জাতীয়পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম উল্লেখ করা হয়েছে যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ২০০৩ সালে আমি কানাইঘাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ থাকাবস্থায় তৎকালিন জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিছ চৌধুরী তখন কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ছিলেন। কলেজের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক সভা সমাবেশে স্বাভাবিক ভাবে আমি তাঁর সাথে যোগদান করি। ২০০৪ সালে হারিছ চৌধুরীর সাথে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারনে তারই ইশারায় মামলা জনিত কারনে ২৮ দিন কারাবরন করি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহনের পাশাপাশি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে ২০১৩ সালে কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন এবং সদ্য সমাপ্ত উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে সাধারন সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হয়ে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এতে করে একটি কু-চক্রি মহল আওয়ামীলীগের নাম ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে নানা ভাবে মিথ্যা অপ্রপচার চালিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অপ-প্রচার করা হলে আইনের আশ্রয় নিবেন বলে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের জানান সিরাজুল ইসলাম।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার পাশাপাশি সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি ২০১০ সালের ফেব্রæয়ারিতে রাজাগঞ্জ শিকদার ফাউন্ডেশন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। এছাড়াও স্বদ্যোগে ২০১০ সালের জুন মাসে কানাইঘাটে একমাত্র মহিলা কলেজে প্রতিষ্ঠা সহ কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানেও তিনি একজন শিক্ষাবিদ হিসাবে অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষকতা সহ বীরদল এনএম একাডেমী, রামিজা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কানাইঘাট পাবলিক হাই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি জামাল উদ্দিন।

শেয়ার করুন