তিন দিন ধরে বয়ে চলছে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা -শীতের তীব্রতা বাড়ছে

 

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি.
তিনদিন ধরে বয়ে চলছে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে। আজ শনিবার সকালে শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়সি। মৌলভীবাজার জেলার প্রত্যকে উপজেলায় শীতের তীব্রতা বাড়ছে। বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ এই দুইটি উপজেলা জুড়ে পাহাড় ও চা বাগান বেষ্ঠিত এলাকা। ভোরে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া থাকছে জেলার প্রত্যন্ত এলাকা। সূর্য ডুবার সঙ্গে সঙ্গে এখন প্রতিরাতেই মৃদু বাতাস বইছে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস জানায়, গত বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার সকাল ৬টায় শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ।
আজ শনিবার শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের সহকারি জাহিদুল ইসলাম মাসুম জানান, আজ শনিবার সকাল ৯ টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে অনুযায়ী ৩ দিন ধরে শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এতে বিপাকে পড়তে শুরু করেছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষেরা।
শ্রীমঙ্গল হাইল-হাওরের বড় গাঙিনা সম্পদ ব্যবস্হাপনা সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মিন্নত আলী জানান, শীত পড়ার সাথে সাথে মৎস্য অভয়াশ্রম ও পাখির অভয়ারণ্য বাইক্কা বিলে কিছু কিছু করে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। এতে বাইক্কা বিলে এখন দর্শনার্থীদের আগমন শুরু হয়েছে। সপ্তাহে শুক্রবার, শনিবারসহ ছুটির দিনগুলোতে পর্যটক, দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেশি থাকে।
এদিকে,ভোরে অনেককে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন। জেলায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর ড. সুব্রত সিংহ বলেন, এরইমধ্যে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিন ২০-২৫ শিশু ও বিদ্ধ বয়সীরা সর্দি জ¦র ও কাশি নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে শীতকে কেন্দ্র করে উপজেলা শহরগুলোতে শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতেও ভিড় বাড়ছে। আর নিম্ন আয়ের মানুষেরা ফুটপাতে গড়ে ওঠা দোকানের পুরোনো কাপড়ের ওপর ভরসা করছেন। তবে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো.আছাদুজ্জামান বলেন, ইতোমধ্যে দুইটি উপজেলার চা শ্রমিক ও গরীব দুস্থ পরিবারের মাঝে ৯ হাজার শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেছেন স্থানীয় উপাধ্যক্ষ ড.আব্দুস শহীদ এমপি। তিনি আরও বলেন,চা শ্রমিকদের মাঝে আরও শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। কারণ যে পরিমাণ শীতবস্ত্র পাওয়া তা দিয়ে দুই উপজেলা শীতার্ততের শীত নিবারণ করা সম্ভব না।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা রোকেয়া বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। শীতবস্ত্রের যে দাম আমাদের পক্ষে শীতের নতুন কাপড় কেনা সম্ভব নয়। আমরা প্রতি বছর খোলা বাজার থেকে শীতবস্ত্র ক্রয় করে ঠান্ডা নিবারণ করি। একই কথা বলেন রওশন আরা,সাথী বেগম,রাখি বেগম।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.নজরুল ইসলাম ও কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.আশেকুল হক বলেন, শীতার্ত দুস্থ অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে শুরু করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুছ সকাল ১০টায় বলেন,‘দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে বিরাজ করছে।’
শেয়ার করুন