নিজস্ব প্রতিনিধি.
বাংলাদেশ চা শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য গঠিত মজুরি বোর্ডের দ্বিতীয় সভার প্রাক্কালে ‘বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন’ এর পক্ষ থেকে চা শ্রমিকদের দৈনিক নগদ মজুরি ৪০০ টাকা নির্ধারণের যৌতিকতা তুলে ধরে নি¤œতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে স্মারকলিপি পেশ করেছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন।
(১৭ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য সচিব দীপঙ্কর ঘোষের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান স্মারক-লিপি পেশ করেছেন।
এসময় বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, মৌলভীবাজারের করিমপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি গণেশ বড় কুর্মী, করিমপুর চা বাগানের মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বেলাল হোসেন, রাজনগর চা বাগানের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বিপ্লব মাদধাজী পার্সি, চানপুর চা বাগানের শ্রমিক নেতা খায়রুন বেগম ও সন্ধা ভৌমিক, মৌলভী চা বাগানের সিলাষ গাড্ডী ও সজীব বড় কুর্মী প্রমুখ।- বক্তরা বলেন, চা শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য সরকার প্রায় দুই মাস পূর্বে মজুরি বোর্ড গঠন করেছে। চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক উল্লেখিত মজুরি বোর্ডের একজন সদস্য হিসেবে মনোনিত হয়েছেন। কিন্তু চা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চা শ্রমিকদের কাছে উল্লেখিত মজুরি বোর্ড সম্পর্কে কোন সংবাদ জানানো হয়নি এবং শ্রমিক পক্ষের মজুরি প্রস্তাবনা বিষয়ে শ্রমিকদের মতামত গ্রহণ করা হয়নি।
- চা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করার লক্ষে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন যাবত মজুরি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৪১ ধারায় বর্ণিত মানদন্ড সমুহ এবং জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন ২০১৫ এর ঘোষণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে মজুরি নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। এই দাবিতে গত ২০মে মৌলবীবাজারের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
- মজুরি বোর্ডের কাছে চা শ্রমিকদের দাবি হলো-
১.দ্রব্য মূল্য পে স্কেল, জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন বিবেচনা করে চা শ্রমিকদের দৈনিক নগদ মজুরি ৪০০ টাকা দিতে হবে। রেশন
হিসাবে প্রত্যেক শ্রমিককে সপ্তাহে ৫ কেজি এবং নির্ভরশীলদের জন প্রতি সপ্তাহে ৩ কেজি চাল এবং প্রতি শ্রমিককে মাসে ২ কেজি চা পাতা দিতে হবে। নিরিখের অতিরিক্ত প্রতি কেজি কাঁচা পাতা উৎপাদনের জন্য এবং ছুটির দিনে কাজের জন্য দ্বিগুন হারে মজুরি দিতে হবে।
২. চাষাবাদের জন্য প্রদত্ত জমির জন্য সরকার নির্ধারিত ভূমি-করের অতিরিক্ত রেশন কাটা যাবে না। বাস্তবসম্মত বাসস্থান ব্যবস্থা,স্যানেটিশন, বিশুদ্ধ খাবার পানির সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৪.দেশের সকল চা বাগানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পর্যাপ্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করতে হবে। চা শ্রমিক সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত
করতে শিক্ষাভাতার ব্যবস্থা করা। প্রতি বাগানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা উপকরণ, ডাক্তার ও ঔষধ সরবারহ নিশ্চিত করতে হবে। বাগানের বাইরে
চিকিৎসার প্রয়োজন হলে চিকিৎসা ব্যয় মালিকদের বহন করতে হবে।
মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে স্মারকলিপি পেশ -বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন
শেয়ার করুন