শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মেয়াদ পূর্তির পরও বন বিভাগ থেকে সামাজিক বনায়নের গাছ না কাটায় জীবিকা নির্বাহে ঋণগ্র¯’ হয়ে পরেছেন উপকার ভোগিরা। উপকারভোগী দরিদ্র জনগোষ্ঠী তাদের সর্বস্ব দিয়ে এই বনায়ন সৃজন করেছেন। কিš‘ বনবিভাগের টালবাহানায় দীর্ঘ উনিশ মাস ধরে গাছ গুলো কাটা হ”েছ না।
দীর্ঘ ১০ বছর বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ তুলে তারা জীবিকা নির্বাহ করে পরিবারপরিজন নিয়ে এসব গাছ পরিচর্যা ও পাহারা দিয়ে এ পর্যায়ে নিয়ে আসেন। আশা ছিল লভ্যাংশের টাকা দিয়ে সেই ঋণ পরিশোধ করবেন। কিš‘ তাদের সেই আশায় এখন গুড়ে বালি। দু’চোখে অমানিষার অন্ধকার দেখছেন তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে ¯’ানীয় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই কষ্টের কথা জানান উপকার ভোগির পক্ষে মো. গোলাম মোস্তফা।
তিনি লিখিত বক্তব্য বলেন, তারা কালাপুর গ্রামের ৩১ জন উপকারভোগি ২০০৭-২০০৮ সালে বন্যপ্রাণি ব্যব¯’াপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন চাউতলী বনবিটে ৩০.৩৭ হেক্টর ভূমিতে প্রায় ৭ হাজার বনজ,কৃষিজ, ফলজ বৃক্ষ বৃক্ষরোপণ করেন। চুক্তিকালে ওই বনে চার বছর বয়সি কিছু বৃক্ষ আগেরও লাগানো ছিল। যার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৮ সালের ১ জুলাই। চুক্তি অনুসারে ১০ বছর পর এসব গাছ কর্তণ করে বিক্রয় করবে বনবিভাগ। এ বিক্রয়লব্ধ অর্থের ৪৫% বন অধিদপ্তর, ৪৫% উপকারভোগী আর বাকি ১০% ট্রি ফার্মিং ফান্ডে জমা হবার কথা ছিলো।
তিনি জানান, বনবিভাগের সাথে তাদের সামাজিক বনায়নের চুক্তি হবার পর থেকেই তারা গাছ ও সরকারের সংরক্ষিত বনাঞ্চল রক্ষায় নিজেদের অর্থে নৈশ চৌকিদার নিয়োগ করেন। উপকারভোগীরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে দিন-রাত পাহারা দেন। গত ১০ বছরে এই বন বিটের তাদের সামাজিক বনায়নের একটি শতবর্ষী বা পুরাতন গাছ চুরির কোন রেকর্ড নেই।
তাছাড়া তাদের সামাজিক বনায়ন বা বাফার জোনে বনের প্রাণিদের খাদ্য যোগান দেয় এমন গাছ থেকে থাকলে তা না কেটে অন্য গাছ গুলো কাটার জন্য তারা ¯’ানীয় বন বিভাগকে বলেছেন। কিš‘ বন বিভাগ গাছ কাটতে টালবাহানা করছে। উপকারভোগী দরিদ্র জনগোষ্ঠী তাদের সর্বস্ব দিয়ে এই বনায়ন সৃজন করেছেন। এটিকে কেন্দ্র করেই তাদের জীবন-মান পরিচালিত। অনেকেই বাগান রক্ষা করতে নানা সমিতিসহ বিভিন্ন ভাবে ঋণগ্র¯’ হয়েছেন। এসব ঋণের শোধ করতে অনেক পরিবার গাছ বিক্রয়লব্ধ ৪৫% টাকার অপেক্ষায় দিনানিপাত করছেন। দীর্ঘ ১৯ মাস ধরে নানা অজুহাতে তাদের সামাজিক বনায়নের গাছ কর্তন না করায় অনেক পরিবার এখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে পরেছেন।
তাই বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ও ¯’ানীয় সংসদ সদস্য নিকট তারা দ্রæত গাছ গুলো কাটার ব্যব¯’া গ্রহনের জন্য আকুল আবেদন জানান। একই সঙ্গে বন বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে সুদৃষ্টি কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে ৩১জন উপকারভোগীর উপ¯ি’ত ছিলেন।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণি ব্যব¯’াপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘উপকারভোগিরা ন্যাচারাল গাছের ভেতরই বাগান করেছিল। এখন যদি তারা ন্যাচারেল গাছ রেখে তাদের সৃজন করা গাছ কাটতে চায় তা হলে আমাদের কোন অসুবিধা নেই। তারা বনবিভাগের বরাবর আবেদন দিলেই আমরা কাটতে দেব।’
মেয়াদপূর্তির পরও সামাজিক বনায়নের গাছ কাটতে বনবিভাগের টালবাহানা-শ্রীমঙ্গলে উপকারভোগীদের সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
শেয়ার করুন