- মৌলভীবাজার প্রতিনিধি.
- যত্রতত্র ময়লা আর্বজনা এবং অপরিচ্ছন বাথরুম,টিস্যুর টুকরা ভর্তি কমোডের ভেতরসহ ইত্যাদির কারণে শহীদ ডা. শামসুদ্দীন আহমেদ জেনারেল হাসপাতালের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র ছাড়াই বাসায় ফিরলেন প্রবীণ সাংবাদিক এম এ সালাম। তবে ওসমানীর মেডিক্যাল হাসপাতালের পরিচালককে মোবাইল ফোনে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন সাংবাদিক এম এ সালাম।
আজ শনিবার দুপুরে সিলেট শহীদ ডা. শামসুদ্দীন আহমেদ জেনারেল হাসপাতাল ছাড়পত্র ছাড়াই বের হয়ে চলে যান।
ছাড়পত্র ছাড়াই সাংবাদিক বাসায় চলে গেছেন বিষয়টি আমার নজরে নেই বলে জানালেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা.প্রেমানন্দ মন্ডল। তিনি বলেন, তিনি কখন গেছে আমার জানা নেই। কি কারণে গেলেন তাও তিনি কিছুই বলেন নাই। তিনি আরও বলেন, উনার (এম এ সালাম) রক্তের সিম্পল পাঠানো হয়েছে। আশাকরি ২-১দিনের মধ্যে হাতে রির্পোট পাওয়া যাবে। তবে রিপোর্ট নেগেটিভ।’এর আগের দিন(২৭মার্চ) শুক্রবার হাসপাতালের নানা বিষয় নিয়ে সাংবাদিক এম এ সালাম অভিযোগ করেন বলেন, হাসপাতালের যে কক্ষে আমাকে নিয়ে রাখা হয়েছে, সেখানে মানুষ বসবাসের উপযোগি নয়। ছিল না বিদ্যুৎ, নোংরা বাথরুম, বেডে নোংরা, কভার নোংরা, যে বালিশ দেওয়া হয়েছে সেটা মাথা রাখার মতো নয়। পরে ওই হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা রুম পরিবর্তন করে দেন। রুম পরিবর্তন করার পরও গত বৃহস্পতিবার বাথরুম নোংরার কারণে এর পর থেকে বাথরুমে যেতে পারেননি। চিকিৎসার নামে সুস্থ মানুষকে অসুস্থের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভুগি লন্ডন ফেরত প্রবীন সাংবাদিক এম এ সালাম ।
- তবে শনিবার বিষয়টি অস্বীকার করে সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন,ভাই উনার রুম চেঞ্জ করে দিছি। তারপরও যদি উনি বলে তাহলে কি আর করার।’
- সাংবাদিক এম এ সালামের ব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল হামিদ মাহবুব বলেন, তিনদিন খুবই কষ্টে ছিলেন সহকর্মী সালাম ভাই। তিনি দোযখের ছিলেন বলে জানান। হাসপাতালের পানি সংকট,নোংরা ফ্লোর,নোংরা আসবাবপত্র,বাথরুমের কমোডের ভেতরে টিস্যুর টুকরা,বেসিনসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ময়লা আর্বজনায় ভর্তি ছিল। রুমে খুব দুর্গন্ধযুক্ত ছিল। আজ শনিবার দুপুরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে মৌখিকভাবে জানিয়ে তিনি চলে আসেন। রক্তে সিম্পল নেয়া হয়েছিল,সেখানে রিপোর্ট নেগেটিভ পাওয়া গেছে।’
- প্রসঙ্গত: গত বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) যুক্তরাজ্য থেকে সকাল নয়টায় দিকে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন।
সেখান থেকে একটি ফ্লাইটে সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে দুপুর ২টায় এসে পৌঁছান। সেখানে প্রবীণ সাংবাদিক ও মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত সভাপতি এম এ সালামের শরীরে ৯৯ ডিগ্রি জ্বর পাওয়া যায়। তাকে বলা হয় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনন্টিনে থাকতে হবে। তিনি রাজিও হন। এর নেওয়া হয় সিলেট শহীদ ডা. শামসুদ্দীন আহমেদ জেনারেল হাসপাতাল।
এম এ সালাম জানান, হাসপাতালের যে কক্ষে আমাকে নিয়ে রাখা হয়েছে, সেখানে মানুষ বসবাসের উপযোগি নয়। ছিল না বিদ্যুৎ, বাথরুম, বেডে নোংরা কভার, যে বালিশ দেওয়া হয়েছে সেটা মাথা রাখার মতো নয়। নেই ডাক্তার কিংবা সেবিকা। এই অবস্থায় সন্ধ্যা পার হবার পর তিনি যখন কর্মরত গার্ডকে ডেকে হাসপাতালের কাউকে আনতে বললেন; গার্ড একজনকে ডেকে আনল। তার কক্ষ পরিবর্তন করে দেওয়া হলো অন্য আরেকটি কক্ষে। সে কক্ষে বিদ্যুৎ আছে,কিন্তু বাথরুমের বেসিন নোংরা, বালতি ব্যবহার উপযোগী নয়, মশা ভন ভন করছে। মশা থেকে বাঁচতে পুরো রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। রাতে কোনো চিকিৎসক কিংবা নার্স- কেউই খোঁজ খবর নেয়নি।
আজ শুক্রবার (২৭ মার্চ) মোবাইল ফোনে ভুক্তভুগি এম এ সালাম জানান, সকালে মুখ ধোয়ার মতো পানি ছিল না। গত (বৃহস্পতিবার) দুপুর থেকে আজ (শুক্রবার) এই ভোর পর্যন্ত কোনো খাবার সরবরাহ করা হয়নি। তিনি জানান, এখন তো আমার কোনো জ্বর নেই। আমাকে এখানে রেখে তারা কি করবে, সেটাও কিছু বলছে না। আমি তো বাসায় থেকেই ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ করতে পারতাম।
সিলেট সির্ভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল মোবাইল ফোনে বলেন, এ এম সালাম (সাংবাদিক সাহেব) যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূন মিথ্যা। সেখানে বাথরুম নোংরা বা পানি না থাকার থাকার প্রশ্নই উঠে না। শুক্রবার সকালে হাসপাতালে পরিদর্শন করেছি এবং উনাকে ভাল রুম দিয়েছি। উনার সব সময় দেখবাল করার জন্য ডাক্তার ও নার্স নিয়োজিত আছে। খাবারদাবার ঠিকমতো দেয়া হচ্ছে।’
যত্রতত্র ময়লা আর্বজনা এবং অপরিচ্ছন বাথরুম,টিস্যুর টুকরা ভর্তি কমোডের ভেতরসহ ইত্যাদির কারণে ছাড়পত্র ছাড়াই – বাসায় ফিরলেন প্রবীন সাংবাদিক এম এ সালাম
শেয়ার করুন