শ্রীমঙ্গলে আধা-কাচা ধান কাটছে কৃষকরা

শ্রীমঙ্গল(মৌলভীবাজার)প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল হাইল হাওর ও বিভিন্ন গ্রামে চলতি মৌসুমে পানি সংকট ও বোরো ২৮ কাঁচা-পাকা ধান চিটা হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের। সে কারণে জীবিকার একমাত্র অবলম্বন আধাপাকা বোরো ধান কেটে ঘরে তুলছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
এদিকে দেশে করোনা ভাইরাস প্রার্দুভাবে মৌলভীবাজার জেলাকে লকডাইন ঘোষণা করায় ধান কাটার শ্রমিকরা ঘর থেকে বের না হতে পারায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে প্রকট হারে।
সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল সদর,ভূনবীর,আশিদ্রোন,সিন্দুরখান,সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, বোরো ২৮ আধাপাকা ধান কাটছেন ওই এলাকার কৃষকরা। জানা যায়, সঠিক সময়ে পানি না দিতে পারায় এবং ধান জ্বলে চিটা হয়ে যাওয়ায় ভয়ে উঠতি ফসল কোনোমতে ঘরে তোলার জন্য আধাপাকা ধান কেটে মাড়াই করা শুরু করেছেন এসব অঞ্চলের কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে শ্রীমঙ্গল প্রায় ৯ হাজার ৪শ’ ১২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৩শ’৯৫ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭শ’ হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত বোরো আবাদ হয়েছে।
উপজেলার প্রান্তিক চাষিরা বলেছেন, পানির অভাবে প্রায় কয়েক শত একর ধানের চারা নষ্ট হতে বসেছে। শুকিয়ে যাওয়া মাটি ফেঁটে চৌঁচির। এই সময়ে ধান গাছে ফুল এসেছে কিন্তু, পানির অভাবে এসব ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক জায়গায় ধানের চারা মরে গেছে। তারা বলেছেন, চলতি করোনা মহামারির কারণে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তায় এই ধানের উপর তারা আশার বীজ বপন করেছিলেন। এখন তাদের সব স্বপ্ন ধুলায় মিশে যেতে বসেছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম ভাড়াউড়া গ্রামের বোরো ধান চাষী আলমগীর মিয়া জানান, ধান ভালো হলেও ধান আধাপাকা হয়ে সব ধান চিটা হয়ে গিয়েছে। আমরা ১০ কেদার (৩০ শতাংশ সমান ১ কেদার) বোরো ২৮ ধান জ্বলে চিটা হয়ে নষ্ট হয়েছে। তিনি আরও জানান,যেখানে ১ কেদারে ১৬ থেকে ১৮ মণ ধান পেতাম সেখানে এবছর ৮ মণও ধান পাবো না।
একই গ্রামের মোছদর মিয়া বলেন,করোনা ভাইরাসে কাজ না থাকায় ঘরে এক সাপ্তাদরে খাবার নেই,ধানে রোগও দেখা দিয়েছে তাই কাচাধান ঘরে তুলতেছি। কাচাধান না কাটলে আমরা ছেলে-মেয়ে নিয়া না খাইয়া মরতে হবে। জানা যায়,গ্রামের কৃষক মানিক মিয়া গতকাল চিটা হওয়ার ক্ষোভে তার ধানে আগুণ ধরিয়ে দেয়।পরে আসপাশের কৃষকরা এসে পানি দিয়ে আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলাউদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে ধান গাছ তার জীবনচক্ররে মধ্যে কাইচথোড় থাকে ফুল ফোটা র্পযন্ত সময়ে অতরিক্তি ঠা-া ও গরম সহ্য করতে পারে না। ওই সময় বাতাসরে তাপমাত্রা যদি ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসরে নিচে অথবা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসরে উপরে যায় তাহলে ধানে ব্যাপকভাবে চিটা দেখা দয়ে। তাছাড়া ধান যখন দুধ পর্যায়ে থাকে তখন খরা হলে বা জমিতে পানির অভাব হলে ধান চিটা হতে পারে ।
তিনি আরও জানান,ঝড় বা রোগ, পোকামাকড়রে আক্রমনরে ধান চিটা হতে পার। যে কারণে ওই এলাকার কৃষকরা আগাম ধান কেটে নিচ্ছেন।

শেয়ার করুন