মৌলভীবাজার প্রতিনিধি .
মৌলভীবাজারে ভাবির (বড় ভাইয়ের স্ত্রী) সাথে অনৈতিক সম্পর্কের (পরকীয়া) জের ধরে বড় ভাইকে খুন করেছে ছোট ভাই।
খবর পেয়ে ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যে মূলরহস্য উদঘাটন করে শুক্রবার (১ মে) রাতে অভিযুক্ত সেই ভাইকে আটক করেছে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের আনিকেলি গ্রামে। উদ্ধার করা হয়েছে ভাইকে আঘাত করে মারা সেই লাঠিও।
মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আনিকেলি গ্রামের শ্রমিক মেরাজ মিয়ার (৪৫) স্ত্রীর সাথে তার ছোট ভাই বদরুল মিয়ার (২৭) অনৈতিক সম্পর্ক ছিলো। এ নিয়ে তাদের পারিবারিক বিরোধ তৈরি হয়। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনার তিনদিন আগে মেরাজ মিয়া স্ত্রীকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
এনিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে তিক্ততা ও বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। পরিবারে এক ধরণের গুমট পরিবেশ ছিলো।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর মেরাজ মিয়া বাজারে যান। পথে গাছের আড়ালে ওত পেতে থাকে ছোট ভাই বদরুল মিয়া। বাজার থেকে মেরাজ মিয়া ফেরার পথে বদরুল লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে মেরাজ পাশের একটি ছোট ছড়ায় (খাল) পড়ে যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় বদরুল ভাইকে আঘাত করতে করতে এক পর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। চোখের ভ্রুতে ও অন্ডকোষে মারাত্মকভাবে জখম করে।
পরের দিন শুক্রবার (১ মে) দুপুরের দিকে স্থানীয় মানুষেরা ছড়ায় লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান, ওসি আলমগীর হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) পরিমল দেবসহ মডেল থানার পুলিশ টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
জিয়াউর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি। ঘটনার রহস্য উদ্ধারে তাদের বাবা ও অন্যান্য ভাইসহ পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। এক পর্যায়ে কথাবার্তা ও আচরণে সন্দেহ হলে বদরুল মিয়াকে আটক করা হয়। সে ভাইকে খুনের কথা স্বীকার করে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে। যে লাঠি দিয়ে আঘাত করে ভাইকে মেরেছে, সেই লাঠিও উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।
এদিকে জানা গেছে, নিহত মেরাজ মিয়ার ১০ বছরের ১ মেয়ে এবং ৫ বছরের ১ ছেলে রয়েছে। এ ঘটনায় হতবিহ্বল বৃদ্ধ পিতা আলতা মিয়া (৭৫)।