মৌলভীবাজার প্রতিনিধি.
বাংলা ট্রিবিউনে সংবাদ পকাশের পর বাড়ি ভাড়ার জন্য রাতের বেলায় বের করে দেয়া সেই মহিলাকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নগদ অর্থ প্রদান করেছেন দেশের অন্যতম ইলেট্রনিকস কোম্পানী ওয়ালটন গ্রুপের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার ওয়ালিউল ইসলাম আজিম।
১৬ মে শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের শাপলাবাগ আবাসিক এলাকা রেললাইনের পাশে ওই মহিলার ভাড়া বাসায় গিয়ে ওয়ালিউল ইসলাম আজিম এর পক্ষে নগদ অর্থ হাতে তুলে দেন মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার সিনিয়র সেলস মোহাম্মদ কামরুজ্জামান কামাল ও শ্রীমঙ্গল শোরুমের জুনিয়র অফিসার জয় সরকার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা ট্রিবিউনের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সহ সম্পাদক ও নয়া দিগন্তের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি এম এ রকিব, তরুণ সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী শেখ সারোয়ার জাহান জুয়েল।
এসময় মুঠোফোনে ওয়ালিউল ইসলাম আজিম বলেন, এই মহামারীর সময় সকলকেই একে অপরের পাশে থাকা উচিত। কিন্তু ওই বাড়িওয়ালা তার ভাড়াটিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে অমানবিক কাজ করেছেন। এটি অত্যন্ত দু:খজনক। সংবাদ আমি বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকায় দেখতে পাই। এরপর আমি সিদ্ধান্ত নেই তাদের সহযোগীতা করার। আমার এই সামান্য প্রয়াস তাদের যদি একটুকুও উপকার হয় আমি তাতেই আনন্দিত।
প্রসঙ্গত.গত ১৪মে বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউনে ‘৭০০ টাকা ভাড়া না দিতে পারায় ঠাঁই হলো রাস্তায়’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
জানাযায়, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার পৌর শহরের শাপলাবাগ এলাকায় ৭০০ টাকা মাসিক ভাড়ায় দুটি শিশু সন্তান নিয়ে একটি বাড়িতে থাকতেন এক নারী। করোনাভাইরাসের কারণে উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত মাসের ভাড়া দিতে পারেননি তিনি। এদিকে চলতি মাসেরও অর্ধেক পার হতে চলেছে, কিন্তু এখনও গত ভাড়া পরিশোধ না করতে পারায় দুই শিশুসহ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় ওই নারীকে।
রাত কাটনোর মতো আশ্রয় কোথায়ও খুঁজে না পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানার উল্টোদিকের একটি মার্কেটের সামনের বারান্দায় অভুক্ত দুই শিশুকে ঘুম পাড়িয়ে বসেছিলেন ওই নারী।
এ সময় ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন শ্রীমঙ্গলের তরুণ সমাজকর্মী শেখ সারোয়ার জাহান জুয়েল। এই ঘটনার একটি ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে একটি স্ট্যটাস দেন ওই জুয়েল। তার স্ট্যাটাসটি মুহূর্তে ভাইরাল হয়। বিষয়টি নজরে আসে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামানের।
এএসপির নির্দেশে থানা পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে খাওয়ানোর পর ভোর রাত চারটার দিকে সিএনজি অটোরিক্সাতে ওই পরিবারটকে নিয়ে হাজির হন তাদের ভাড়া বাড়িতে। এ সময় বাড়ির মালিককে ডেকে তোলেন এবং এই ঘটনার পুনরাবৃত্তির বিষয়ে কঠোর সতর্কবার্তা দেন পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান।
পুলিশের পক্ষ থেকে চাল, ডাল, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও নগদ টাকা দেওয়া ছাড়াও তাদের দুই মাসের বাসা ভাড়া পরিশোধ করা হয়। খাবার না থাকলে থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়।
শেয়ার করুন

Leave A Reply