জুবায়ের বিন মকলেছ
ঝিকরগাছা (যশোর) সংবাদদাতা :-
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে যশোর জেলায় ৩৭৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ কোটি ২১ লাখ ৯৬ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে ১৬৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩ কোটি ১১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, ৬১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২৭ টি কলেজে ৪৮ লাখ ২৫ হাজার, ১১৩টি মাদ্রাসায় ১ কোটি ৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ৫টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ও ক্ষতির পরিমাণ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর , মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
যশোরের জেলা শিক্ষা অফিসার এ এস এম আব্দুল খালেক, জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, গত ২০ মে ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে জেলার ৩৭৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিনের চাল উড়ে গেছে। সেই সাথে পাঁকা দেয়ালের উপর বড় বড় গাছ পড়ে ভেঙ্গে গেছে। আবার কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে আধাপাকা দেয়ালে ফাটল ধরেছে। সংস্কার না করা হলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো যাবে না। এ জন্য ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তালিকা ও টাকার পরিমাণ লিখে পাঠিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসে। জেলা অফিস থেকে সেই তালিকা পাঠানো হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর , মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে।
জেলার ৩৭৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সদর উপজেলায় ৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১ লাখ টাকা, ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪৬ লাখ টাকা, ২টি কলেজে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ১৬টি মাদরাসায় ক্ষতি হয়েছে ২৪ লাখ টাকা।
ঝিকরগাছায় ৭৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১ কোটি ৮২ লাখ ৩ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, ২৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯ লাখ ৩হাজার টাকা, ৩টি কলেজে ৫ লাখ টাকা ও ২৩ মাদরাসায় ক্ষতি হয়েছে ৩৪ লাখ ১০ হাজার টাকা।
অভয়নগরে ৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি হয়েছে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১ লাখ টাকা, ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪৬ লাখ টাকা, ২টি কলেজে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ও ১৬টি মাদরাসায় ক্ষতি হয়েছে ২৪ লাখ টাকা।
কেশবপুরে ১২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি হয়েছে ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২ টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেড় লাখ টাকা, ১১ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৬টি কলেজে ১৪ লাখ টাকা ও ৭টি মাদরাসায় ক্ষতি হয়েছে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
চৌগাছায় ৩১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি হয়েছে ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৯টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২২ লাখ টাকা, ২টি কলেজে ৩ লাখ ও ৯টি মাদরাসায় ক্ষতি হয়েছে ৯ লাখ টাকা।
মণিরামপুরে ৩৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা,২০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬৪ লাখ টাকা, ৪টি কলেজে ৫ লাখ টাকা ,৪টি মাদরাসায় ২১ লাখ টাকা ও ১টি ভোকেশনাল স্কুলে ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ টাকা।
বাঘারপাড়ায় ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি হয়েছে ৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০ হাজার টাকা, ৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৩টি মাদ্রাসায় ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও ১টি ভোকেশনাল স্কুলে ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ টাকা।
শার্শায় ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি হয়েছে ২১ লাখ ২৬ হাজার টাকা । এর মধ্যে ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ লাখ টাকা, ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০ লাখ ৫১ হাজার টাকা, ১টি কলেজে ক্ষতি হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা।
জেলা শিক্ষা অফিসার এ এস এম আব্দুল খালেক বলেন, আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠিয়েছি। এই তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এইসব ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে সহযোগিতা করা হবে। আশা করা যাচ্ছে, করোনার পর আগের মত পরিবেশেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারবে।