- জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত রাজনৈতিক অঙ্গন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীও কামরানের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন।
- রাজনৈতিক অঙ্গনও শোক জানানোর পাশাপাশি কামরানকে মূল্যায়নের চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কামরানকে নিয়ে নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন।
- প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা শোকবার্তায় বলেন, ‘স্বীয় কর্মের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা কামরান গণমানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’
- কামরানকে নিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘তাঁর এই চলে যাওয়া সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গণে শুন্যতা সৃষ্টি করবে। বদর উদ্দিন আহমদ কামরান সুদীর্ঘ ২১ বছর জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ মানুষের সাথে কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র। সিলেটের রাজনীতি ও উন্নয়নে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘জনমানুষের নেতা বদরউদ্দিন আহমদ কামরান পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ায় দেশ একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদকে হারালো। বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ছিলেন সিলেটের মাটি ও মানুষের প্রিয় নেতা ও অভিভাবক। তিনি সিলেটের মানুষের সুখে-দুঃখে সবার আগে থাকতেন। বদর উদ্দিন আহমদ কামরান সবসময় দরিদ্র মানুষের সমস্যা নিয়ে এগিয়ে আসতেন। সিলেটের সকল আন্দোলন সংগ্রামে তিনি ছিলেন একজন সম্মুখযোদ্ধা। সিলেট আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কামরান রেখেছেন অসামান্য অবদান। তাঁর মৃত্যুতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধারক ও বাহক একজন লড়াকু নেতাকে আমরা হারালাম এবং সিলেটের রাজনীতিতে যে শূণ্যতা সৃষ্টি হলো তা অপূরণীয়।’
- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি শোকবার্তায় বলেন, ‘সিলেটে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের অবদান চিরস্মরণীয়। আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন প্রত্যন্ত অঞ্চল চষে বেড়ানা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। তাঁর শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়। সিলেটের উন্নয়ন ও জনসেবার জন্য তিনি দীর্ঘদিন মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন।’
- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘তিনি ছিলেন তৃণমূলের নেতা। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়েই ছিল তার রাজনীতি। জনপ্রতিনিধি হয়েও তিনি সব শ্রেণির মানুষের সাথে মিশতেন, সেভাবেই তিনি ধীরে ধীরে গণমানুষের নেতা হয়ে উঠেছিলেন।’
- দলটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘সাধারণ মানুষের দুঃসময়ে তিনি সবার আগে হাজির হতেন। সে কারণে মানুষের হৃদয়ে তিনি দ্রুত স্থান করে নিয়েছিলেন। পরপর দুইবার সিটি মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। মানুষের যে ভালোবাসা তার জন্য ছিল, সেটা কখনও ফুরিয়ে যাবে না। তিনি মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবেন।’
- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, ‘কামরানের মৃত্যুতে সিলেটবাসী আওয়ামী লীগের আরো একজন অভিভাবককে হারালো, যার ক্ষত কখনোই পূরণ হবার নয়। তাঁর মৃত্যুতে দল হারোলো এক কর্মীবান্ধব নেতা।’
- সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার শোকবার্তায় উল্লেখ করেছেন, ‘ বর্তমানে রাজনৈতিক বৈরিতার এই দুঃসময়ে ব্যক্তি কামরান ছিলেন সিলেটের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তিনি দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধিত্ব করে নগরবাসীর হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছেন। তার মৃত্যুতে সিলেটবাসী একজন সিলেটবান্ধব জনপ্রিয় নেতাকে হারালো। যা সহজে পূরণ হবার নয়।’
- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী কামরানকে মূল্যায়ন করেন এভাবে, ‘বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন । সিলেটের মাটি ও মানুষের আপন ছিলেন কামরান। রাজনীতির সম্প্রীতি ও উন্নয়নে সিলেটবাসী তার ভূমিকা আজীবন স্মরণ করবে। শুধু সিলেট অঞ্চল নয় সারাদেশে আওয়ামী লীগের একজন জনপ্রিয় নেতা হিসেবে সমাদৃত ছিলেন তিনি।’
- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এম এ হক ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম কামরানকে নিয়ে বলেন, ‘বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বৃহত্তর সিলেটের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আদর্শিক রাজনীতির বাইরে গিয়ে তিনি ছিলেন সজ্জন রাজনীতিবিদ। সিলেটে রাজনৈতিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম। তার মৃত্যুতে সিলেটবাসী একজন গুণী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারালো। যা সহজে পূরণ হবার নয়।’
- প্রসঙ্গত, রবিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঢাকায় সিএমএইচে মারা যান কামরান। সোমবার দুপুরে সিলেটে তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হয়। পরে মানিকপীর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
শেয়ার করুন