নিজস্ব সংবাদদাতাঃ
মৌলভীবাজার এর কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ বিশেষজ্ঞ ডাঃ না থাকায় বিপাকে পড়েছে রোগীরা।হাসপাতালের শিশু, মেডিসিন, সার্জারীসহ একাধিক পদ থাকলেও নেই কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। জনবল সংকট ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে খুঁড়িয়ে চলছে ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কার্যক্রম। ফলে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
জানা যায়, চা বাগান অধ্যূষিত এ উপজেলার প্রায় তিন লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসার জন্য একমাত্র ভরসাস্থল সরকারি এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০১৮ সনের ১০ মার্চ হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। ৮ কোটি ৩২ লক্ষ ৬ হাজার ৭০১ টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) কর্তৃক বাস্তবায়িত হাসপাতাল ভবনের উন্নীতকরণ ও সংস্কার কাজ করা হয়। পরে তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ মন্ত্রী প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম নির্মিত কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
তবে উদ্বোধনের পর হতেই ৫০ শয্যা হাসপাতালে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। হাসপাতালটিতে মেডিসিন, সার্জারী, শিশু, গাইনী, কার্ডিওলজি, চক্ষু, চর্ম, নাক-কান-গলা, অর্থোপেডিক্স ও মেডিকেল অফিসারের পদ রয়েছে ২০টি। তবে তিনটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রমে টিএইচওসহ রয়েছেন ১২ জন মেডিকেল অফিসার। বিশেষজ্ঞদের কোন পদেই চিকিৎসক নেই। ২০ জন নার্সের মধ্যে রয়েছেন ১৩ জন নার্স। পরিসংখ্যাবিদের পদটিও রয়েছে শুন্য। এক্সরে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও এসবের কোন টেকনিশিয়ান নেই।
ফলে রোগ নির্ণয়ে কোন ব্যবস্থা না থাকায় পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য অন্য জায়গায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। দুইটি অপারেশন থিয়েটার থাকলেও নেই প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি। রোগ গর্ভবর্তী মায়েদের অস্ত্রোপচারে যেতে হচ্ছে ২০ কি.মি. দুরে মৌলভীবাজার। টেকনেশিয়ান, নার্স, ডাক্তার সংকটে চিকিৎসা সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা।
আসমা বেগম, রোজিনা ইসলাম, আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজন রোগীর সাথে আলাপকালে জানা যায়, বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসার জন্য তাদের জেলা সদরে যেতে হয়। এমনকি শিশু বিশেষজ্ঞসহ একজনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। এক্সরে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম থাকলেও কোন পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না। এসব পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য অন্যত্র টাকা খরচ করে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে।
ডাক্তার ও নার্সরা জানিয়েছেন, সদিচ্ছা থাকা সত্তে¡ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের যথাযথ সেবা দেয়া যাচ্ছে না।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ শুন্য পদ পুরণের জন্য উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এখানে এক্সরে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও টেকনিশিয়ান না থাকায় পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, যেসব চিকিৎসক রয়েছেন তাদের মাধ্যমে হাসপাতালে চিকিৎসার মান ভালো এবং করোনাকালীন সময়ে অন্য সময়ের তুলনায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।