আবারো আলোচনায় সিলেট!

নিজস্ব প্রতিবেদক :: মাত্র ১৬ দিনের ব্যবধানে আবারো আলোচনায় এসেছে সিলেটের নাম। এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে নববধূকে গণধর্ষণের পর সারাদেশে শুরু হয় তোলপাড়।এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে সিলেটে পুলিশের নির্যাতনে যুবক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এতে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যাহার করা হয়েছে আরও তিন পুলিশ সদস্যকে।

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গণধর্ষণ করে এক নববধূকে।এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় দেশের সর্বত্র ফুঁসে উঠেন প্রতিবাদীরা। ঘটনার মাত্র ৪ দিনের মাথায় এই মামলার সকল আসামিকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখনো প্রায় প্রতিদিনই বৃহত্তর সিলেটের কোন না কোন জায়গায় ধর্ষণ সংক্রান্ত সংবাদ চলে আসছে গণমাধ্যমে। ধর্ষণের প্রতিবাদে নানা আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে সিলেটে। এই আলোচনার শেষ হতে না হতেই সারাদেশে আবারো আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে সিলেট।বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রবিবার সকালে এক যুবক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গতকাল রবিবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের সময় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রায়হান উদ্দিন (৩৪) নামের এক যুবককে গুরুতর আহতাবস্থায় ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেক এলাহী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হান হাসপাতালে মারা যান। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। হাতের নখও উপড়ানো ছিল।

রায়হান উদ্দিন সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তার তিন মাসের এক মেয়ে রয়েছে। নগরীর রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতো সে।

রায়হানের মৃত্যুর পর পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় সে ছিনতাইকারী ছিল। নগরীর কাস্টঘর এলাকায় ছিনতাই করতে গিয়ে গণপিটুনিতে তার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার পরিবার পুলিশের অভিযোগ অস্বীকার করে ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ তুলেন। এরপর পুলিশও আগের অবস্থান থেকে সরে এসে ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেয়। এর প্রেক্ষিতে সোমবার বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।

সাময়িক বরখাস্তরা হলো-এসআই আকবর হোসেন ভুইয়া, ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস।এছাড়া প্রত্যাহার করা হয়েছে এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে। সোমবার বিকেলে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে শাস্তিমূলক এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এদিকে, রবিবার দিবাগত রাতে নিহত রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তার স্বামীকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখে ১০ হাজার টাকা দাবি ও দাবিকৃত টাকা না পেয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলার অভিযোগ করেন।

শেয়ার করুন