গোয়াইনঘাটে পানিবন্দি লাখো মানুষ, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

সাইদুল ইসলাম গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাটে এক মাসের ব্যাবধানে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে। বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে উপজেলার প্রধান প্রধান নদ নদীর পানি।

পাহাড়ি ঢলে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে সারী-গোয়াইনঘাট ও রাধানগর-গোয়াইনঘাট এবং সালুটিকর গোয়াইনঘাট সড়ক পানিতে তলিয়ে গিয়ে উপজেলা সদরের সঙ্গে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এসব সড়ক সমূহের উপর দিয়ে কোথাও কোথাও দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতায় পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বসত বাড়িতে পানি উঠায় পানিবন্দি হয়ে অনেকে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। বসত বাড়ির পাশাপাশি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকের পুকুরে পাড় ডুবে মাছ ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বাড়ী ঘর প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি গোচারণ ভূমি পানি বন্ধী হওয়ায় গো-খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টানা কয়কে দিনের ভারী বর্ষণ এবং সারী, গোয়াইন, ডাউকি, ও পিয়াইন নদী দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে বৃহস্পতিবার থেকে গোয়াইনঘাটের নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত যা বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের জাফলং চা বাগান, মমিনপুর, আসাম পাড়া, আসাম পাড়া হাওর, ছৈলাখেল অষ্টম খন্ড (আংশিক এলাকা) নবম খন্ড, সানকিভাঙ্গা, নয়াগাঙের পার, বাউরবাগ হাওর, ভিত্রিখেল হাওর, আলীরগাঁও ইউনিয়নের নাইন্দার হাওর, তিতকুল্লিহাওর, বুধিগাঁও হাওর, রাজবাড়ি কান্দিসহ পশ্চিম জাফলং, রুস্তমপুর, ডৌবাড়ী, লেঙ্গুড়া, তোয়াকুল ও নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের রাস্তাঘাটসহ বাড়িঘর প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

এতে করে কৃষকের বোরো ধান, বীজ তলা এবং সবজি ক্ষেতসহ প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে, এ প্রতিবেদন লেখার সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়া অব্যাহত রয়েছে। সারী, গোয়াইন, ডাউকি ও পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ভরাট হয়ে যাওয়া গোয়াইনঘাটের নদ নদী বন্যার কারণ বলে দাবি করেছেন গোয়াইনঘাটের সচেতন মহল। তারা বলছেন পিয়াইন নদী খননে মিলবে মুক্তি। উদ্বার হবে শত কোটি টাকার পাথর। রাজস্ব পাবে সরকার।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,বন্যায় জনগণের দূর্ভোগ লাগবে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পানিবন্ধি মানুষজনের জন্য জরুরী ত্রাণ সহায়তা চেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ জানান, এক মাসের ব্যবধানে ফের বন্যা দেখা দেয়ায় পানিবন্ধি হয়ে গোয়াইনঘাটে পানিবন্দি লাখো মানুষ, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।

শেয়ার করুন