এম.মুসলিম চৌধুরী
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সিক্কা গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে চাঁন মিয়ার (২২) বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করায় মামলার সাক্ষীদের উপর হামলা এবং মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২৭ জুন) দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন কিশোরীর মা ফাহিমা আক্তার। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে বড়বোন শ্রীমঙ্গল সিক্কা গ্রামে আব্দুল করিমের বাসায় বেড়াতে যান। তখন ফাহিমার মেয়েও সাথে ছিলো। ২৪ নভেম্বর বিকেলে ফাহিমার মেয়েকে রেখে করিমের বাসার সবাই পাশের গ্রামে এক আত্মিয়ের বাসায় বেড়াতে যান। ওইদিন রাত ১০টার দিকে চান মিয়া বাসায় এসে তার কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করে এবং এসবের ভিডিও ধারণ করে রাখে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফাহিমা জানান, তার মেয়েকে তিনি বড় ভাই আব্দুল করিমের বাসায় রেখে ঢাকায় একটি পোষাক কারখানায় কাজ করতে যান। তখন করিমের ছেলে চান মিয়া তার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চান মিয়া মেয়েকে নানাভাবে উত্যক্ত করতো। চান মিয়ার বাবা আব্দুল করিম বিষয়টি জানতেন; কিন্তু কোনো গুরুত্ব দেননি। অবস্থা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেলে ফাহিমা মেয়েকে ঢাকা নিয়ে যান। সেখানে একটি স্কুলে ভর্তি করে দেন। ২০১৯ সালে মেয়েকে ঢাকায় বোনের বাসায় রেখে জীবীকার প্রয়োজনে তিনি ওমানে চলে যান। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে বড়বোন শ্রীমঙ্গল সিক্কা গ্রামে আব্দুল করিমের বাসায় বেড়াতে যান। তখন ফাহিমার মেয়েও সাথে ছিলো। ২৪ নভেম্বর বিকেলে ফাহিমার মেয়েকে রেখে করিমের বাসার সবাই পাশের গ্রামে এক আত্মিয়ের বাসায় বেড়াতে যান। ওইদিন রাত ১০টার দিকে চান মিয়া বাসায় এসে তার কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করে এবং এসবের ভিডিও ধারণ করে রাখে। কিশোরীর মা বলেন, চান মিয়া তার মেয়েকে ঘটনা কাউকে জানালে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে তখন মেয়ে ঘটনাটি জানায়নি। পরে ঢাকায় গিয়ে তাকে ওমানে মোবাইল ফোনে সবকিছু জানায়। ঘটনা জানার পরে ফাহিমা ওমান থেকে করিমকে জানান। ওই সময়ে করিম চান মিয়ার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিবেন বলে প্রতিশ্রæতি দেন। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ওমান থেকে তিনি দেশে ফিরেন। করিমের সাথে দেখা করে বিয়ের প্রসঙ্গ তোলেন। কিন্তু প্রতিশ্রæতির কথা ভুলে যান করিম। মেয়ের ‘চরিত্র খারাপ’ অপবাদ দিয়ে মেয়ের সঙ্গে তার ছেলের বিয়ে দেবেন না বলে জানান। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় আদালতে আব্দুল করিম গংদের বিরুদ্ধে ফাহিমা আক্তার দুটি মামলা করেন। মামলাগুলোর একটি সিআইডি এবং অপরটি পিবিআই তদন্ত করছে। মামলা তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় গত ১৫ জুন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুল করিম, তার ছেলেরা এবং ভাড়া করা লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মামলার সাক্ষী মো. শাকিল মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় শাকিল মিয়া, স্ত্রী রুবিনা আক্তার এবং তাদের ৪৫ দিনের শিশুও আহত হয়। জআহত ব্যক্তিরা মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় শাকিলের শ্বাশুড়ি রুজিনা বেগম বাদি হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ফাহিমা বলেন, তিনি একজন স্বামী পরিত্যক্ত নারী। করিম তাকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছেন। সাক্ষীদের বসতবাড়িতে হামলা করছেন, সাক্ষীদের পিটিয়ে আহত করছেন। মেয়েসহ তিনি এবং তার সাক্ষীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন।
শ্রীমঙ্গলে ধর্ষণের বিচার চাওয়ায় সাক্ষীদের উপর হামলার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন
শেয়ার করুন