লেনদেন নিয়ে আয়ূব আলীকে খুন করে লাশ কার্টুনে ভরে ফেলে রাখে ৩ খুনি


এম.মুসলিম চৌধুরী
মৌলভীবাজারে কার্টনে ভরা অজজ্ঞাত মৃতদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ লাশের পরিচয় শনাক্ত ও লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘনটার মধ্যে খুনের সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তথ্য প্রযোক্তির মাধ্যমে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে আটক করেছে।
এর মধ্যে এক আসামি খুনের সাথে জড়িত মর্মে শুক্রবার ৮ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, গত ৫ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে শেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইচার্জ এসআই ইফতেখার ইসালাম মোবাইল ফোনে খবর পান সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন খজ্ঞনপুর ইমাদ ভেরাইটিজ ষ্টোরের বারান্দায় কাগজের কার্টুনের ভিতর হাত-পা রশি দিয়ে বাধাঁ এবং মুখমন্ডল সাদা পলিথিন দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় অজ্ঞাতনামা এক ব্যাক্তি (৫৫) এর লাশ পড়ে আছে।
পরে এসআই ইফতেখার ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাৎক্ষনিক উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল,মো. জিয়াউর রহমান এবং সদর মডেল থানর অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়াছিনুল হক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, অজ্ঞাতনামা মৃত ব্যক্তির ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করেন।
লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়না তন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়।
মৃতদেহের পরিচয় শনাক্তে সহ দ্রæত তদন্তের মাধ্যমে রহস্য উন্মোচনে পুলিশ কাজ শুরু করে। এদিকে লাশের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায়, ময়না তদন্ত শেষে মৃতদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম দাফন সম্পন্ন করেন।
এঘটনায় পুলিশ বৃহস্পতিবার মনসুর রহমান (৩০) অনুপ দাস (৪০) কে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে পাঠায়। আটককৃতদের মধ্যে আসামি মনসুর রহমান বিজ্ঞ আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
এর আগে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়, ভিকটিম আইয়ুব আলীর সাথে টাকা পয়সার লেনদেন এবং পুর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে গত ৪ জুলাই রাত ১০টার দিকে আসামি মনসুর, অনুপ দাস ও পলাতক আসামি ইকবাল হোসেন মিলে আয়ূব আলীকে হত্যা করে। আটককৃতদের তথ্যমতে ঘটনার সাথে জড়িত আরেক আসামি নবিগঞ্জের দত্তগ্রামের ছানু মিয়ার ছেলে মাহমুদ ইকবালকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার ৮ জুলাই আদালতে পাঠায় পুলিশ।
গত ৪ জুলাই কার্টুন বন্দি লাশ উদ্ধারের পর মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত ভার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) মো. মশিউর রহমান কে প্রদান করা হয়। পরে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া নিদের্শনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় (ক্রাইম এন্ড অপস) এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো. জিয়াউর রহমান এর তদারকিতে ও সদর থানার অফিসার ইচার্জ মো, ইয়াছিনুল হকের সমন্ময়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন ও জড়িতদের আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

শেয়ার করুন