শ্রমিকদের অধিকার আদায় নয়, নেতা হতে চায় মোহন রবিদাস


রিপোর্ট,এম.মুসলিম চৌধুরী:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল কালীঘাট চা বাগানে বৈঠক শেষে বিভিন্ন নেতাদের আপত্তির মূখে নিজে চা শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহব্বায়ক হিসেবে ঘোষনা দেন চা শ্রমিকদের অধিকার আদায় নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া মোহন রবিদাস। এদিকে তার এ ঘোষনায় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলেন, চা শ্রমিকদের অধিকার আদায় নয় মোহনের উদ্দেশ্য নেতা হওয়া।
বুধবার রাত ১২টার পর মোহন রবিদাস তার ফেইসবুক প্রেইজে লাইভে গিয়ে কালীঘাট চা বাগানে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বৈঠকে অংশনেয়ার জন্য সকল পঞ্চায়েত প্রধানদের আমন্ত্রন জানান এবং বৈঠক শেষে বিকেল ৪টায় প্রেস ব্রিফিং করার কথা বলেন। তবে এ প্রেস ব্রিফিং বা বৈঠকের কোন আমন্ত্রন মৌলভীবাজার বা শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সভাকরে শেষ করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মোহন রবিদাস সাথে আরো কয়েকজন চা শ্রমিককে নিয়ে প্রেস বিফ্রিংএ আসেন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীর মধ্যে এ প্রতিবেদক ও প্রথম আলো শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংএ মোহন রবিদাস বলেন, বন ও পরিবেশমন্ত্রী যেহেতু বলেছেন শনিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে একটা সিন্ধান্ত আসবে তাই আমরা শনিবার পর্যন্ত দেখে নতুন কর্মসূচী ঘোষনা করবো। তবে আমাদের কর্মবিরতি ও আন্দোলন চলবে।
এ সময় কালিঘাট চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি অবান তাঁতী, শ্রমিক নেতা গোপাল রাজভর ও মিন্টু তাঁতী বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার অপেক্ষায় আছি ঘোষনা পেলে কাজে যাবো মিটিংএ এই সিন্ধান্ত হয়েছে।
তাদের কমিটি গঠনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে গোপাল রাজভর বলেন, কমিটির বিষয়ে আমরা এখণ কথা বলবো না। এ সময় মোহন রবিদাস বলেন সকল পঞ্চায়েত প্রধানদের উপস্থিতিতে আমি মোহন রবিদাশকে আহবায়ক ও অবান তাঁতীকে সদস্য সচিব করে চা শ্রমিক অধিকার পরিষদ গঠন করা হয়। মোহন রবিদাসের এ ঘোষনার সাথে সাথে তার পাশে থাকা মিন্টু তাঁতীসহ আরো দুই চা শ্রমিক বলেন, এটা সিন্ধান্ত হয়নি। কেউ রাজী হয়েছে কেউ আপত্তি জানিয়েছে। এসময় সেখানেই একটা হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা জানান, আমরা নির্বাচিত চা শ্রমিক ইউনিয়ন। চা শ্রমিকদের মজুরিবৃদ্ধিসহ ২০ দফা দাবী আদায়ে বাংলাদেশীয় চা সংসদের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করেছি। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু সুবিধা আদায় করেছি। মজুরি নিয়ে আমরা আন্দোলন জোরদার করেছি। মালিক পক্ষ ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা পর্যন্ত দিতে রাজী হয়েছে। আমরা তা মানিনি। মানসম্মত মজুরির দাবীতে এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। মধ্যখান থেকে মোহন রবিদাসরা আন্দোলনের নামে নিজের গোপন স্বার্থ চরিতার্থ করছে। তিনি বলেন, মোহন রবিদাশের মুললক্ষ্য মজুরি বৃদ্ধি নয় তার চাওয়া নেতা হওয়া।
এদিকে সন্ধ্যায় মোহন রবিদাস মোঠফোনে বলেন, মিটিংএর সিন্ধ্যান্ত মোতাবেক তাকে আহবায়ক ও অবান তাঁতীকে সদস্য সচিব, সকল বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি- সম্পাদক ও সকল ছাত্র-যুবকে সদস্য করে চা শ্রমিক অধিকার পরিষদ গঠন করা হয়। এই কমিটি করার মুল উদ্দেশ্য হিসেবে তিনি বলেন, চা শ্রমিক ইউনিয়নের কোন নেতা এখন মাঠে নেই। আন্দোলন করছে ছাত্র-যুবরা। এর একটি ফোরাম প্রয়োজন। তাই এটি করা হয়েছে। এ সময় চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির চুক্তি তাদের সাথে করার জন্য তারা আহবান জানাবেন কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা পরের বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক হলে সেখানে চা শ্রমিক অধিকার পরিষদ থাকতে চায়।

 

শেয়ার করুন