মাধবপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৌলভীবাজারের একই পরিবারের চারজনসহ নিহত ৫, আহত ৩

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) থেকে : হযরত শাহজালাল (রাঃ) বিমানবন্দর থেকে মালয়েশিয়া প্রবাসীকে আনতে গিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার একই পরিবারের চারজনসহ নিহত ৫।  নিহতরা হলেন-মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার মাদানগর গ্রামের একই পরিবারের আতিকুর রহমান শিহাব (১৫), মেয়ে সাদিয়া (২৬), মেয়ের জামাই আব্দুস সালাম (৩৫), শিশুকন্যা হাবিবা (২), তাদের মাইক্রোবাস চালক ছাদির আলী (৩২)।  তার বাড়ি কুলাউড়ার কমলাছিলা গ্রামে।

পাঁচ বছর পরে দেশে আসছে প্রবাসী ভাই।  বোন সাদিয়া সুলতানা (২২) স্বামী সন্তানসহ গিয়েছিলেন ঢাকা বিমানবন্দরে। ভাইকে নিয়ে ফেরার পথে শনিবার (৭ জানুয়ারি) মধ্যরাতে  মাধবপুরের নোয়াপাড়া এলাকায় ভয়ানক সড়ক দূর্ঘটনায় এই ৩ জনের সাথে ৫ জনের জীবন প্রদীপ নিভে গেলো। ফলে দু’টি পরিবারে আনন্দের পরিবর্তে চলছে শোকের মাতম।

কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মাদানগর গ্রামের নুরুল ইসলামের মালয়েশিয়া প্রবাসী ছেলে আখলিছুর রহমান রাজু (২৯) দীর্ঘ ৫ বছর পরে দেশে ফিরেন শনিবার রাতে। দেশে ফেরার পর বিয়ের প্রস্তুতি ছিলো। এমন খুশিতে প্রবাসী রাজকে বিমানবন্দর থেকে আনতে ছেলে মেয়ে জামাতা ও নাতনীসহ ৬জনকে সাথে নিয়ে এলাকার মাইক্রোবাস ভাড়া করে ঢাকায় যান। মধ্যরাতে রাজুকে নিয়ে মাইক্রোবাস যোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।

গাড়িটি মাধবপুর থানার নোয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবোঝাই ট্রাকের সাথে তাদের মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। একই সময় দ্রুতগতির একটি পিকআপ ভ্যান পেছন দিকে ধাক্কা দেয় মাইক্রোবাসের।

এতে ঘটনাস্থলেই প্রবাসী রাজুর সাদিয়া সুলতানা (২২), তার স্বামী আব্দুস সালাম (৩২) ও তাদের একমাত্র মেয়ে হাবিবা (২) মারা যান। হাসপাতালে নেয়ার পর প্রবাসী রাজুর ছোটভাই আতিকুর রহমান শিহাব (১৩) ও গাড়িচালক পৃথিমপাশার ইউনিয়নের সাদির মিয়া (২৬) মারা যান।

গুরুতর আহত মালয়েশিয়া প্রবাসী রাজু এবং তার পিতা নুরুল ইসলাম (৫০) ও চাচাতো ভাই নিশাত (১৮) সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রবাসী রাজুর নিহত বোন সাদিয়া সুলতানার স্বামীর বাড়ি কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভেড়াছড়া গ্রামে এবং প্রবাসী রাজুর পরিবারে চলছে শোকের মাতম। শুধু দু’টি পরিবারে নয় গোটা এলাকায় এমন ভয়াবহ দূর্ঘটনার খবরে হতবাক মানুষ।

কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওদুদ বখস জানান, বিদেশ থেকে আসার পর রাজুর বিয়ে নিয়ে পরিবারের প্রস্তুতি ছিলো। কিন্তু দূর্ঘটনা দু’টি পরিবার এখন কতটা অসহায় হয়ে পড়েছে। রাজুর পরিবার তার ভাইয়ের লাশ দাফর করবে না হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা করাবে। অপরদিকে সাদিয়া সুলতানার পরিবার এক সাথে ৩টি লাশের দাফন করতে হবে। কিভাবে একব শোক মানুষ সইবে।

শোক প্রকাশ করেছেনঃ একই পরিবারের ৪জন এবং ড্রাইভারসহ ৫জনের মূত্যুতে ব্যক্তিগত ভাবে এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন ১০নং হাজীপুর ইউনিয়ন প্রবাসী পরিষদ এর সভাপতি রুহুল কুদ্দুছ চৌধুরী এবং সাধারন সম্পাদক মোঃ কাওছার আলী।
জালালাবাদ বার্তা পরিবারের পক্ষ থেকেও গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।  নিহত পরিবারের জন্য দোয়া কামনা করছেন।
শেয়ার করুন