চরফ্যাসন, ভোলা প্রতিনিধিঃ
ভোলার চরফ্যাসনে বৃদ্ধ কৃষকের ৫০ বছরের ভোগদখলীয় জমি রাতের আঁধারে জবর দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মোঃ হোসেন, মিজান ফরাজী ও ইসরাফিল নামের তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গভীর রাতে জমি দখল করে ঘর নির্মানের কর্মযজ্ঞ চালান ওই প্রভাবশালী চক্র। পরে রাতেই কৃষক আব্দুল বারেকের পরিবারের পক্ষ থেকে শশীভূষণ থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিলেও ফের শনিবার থেকে আবারও জবর দখল করে নির্মান কাজ অব্যহত রেখেছেন তারা।
৭ এপ্রিল (শুক্রবার) রাতে শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামে রাতের আধাঁরে জমি জবর দখলের ঘটনা ঘটে।
বৃদ্ধ কৃষক আব্দুল বারেক অভিযোগ করেন, এওয়াজপুর ইউনিয়নে পশ্চিম এওয়াজপুর মৌজায় এসএ ২২১ নং খতিয়ানে ১৯৫২ সনে ৩ একর ৮০ শতাংশ জমি খরিদ করে বসত বাড়ি নির্মাণ করে ভোগদখলে আছেন। সম্প্রতি জরিপ চলাকালীন সময়ে ভূলবশত প্রতিবেশী মোঃ হোসেনের নামে তার খতিয়াভূক্ত জমি থেকে ৩৯ শতাংশ জমি রেকর্ড হয়। এনিয়ে গত বছর (২০২২ সালে) তিনি চরফ্যাসন সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে রেকর্ড সংশোধন চেয়ে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত ওই মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
মামলা দায়েরের পরপরই গোপনে প্রতিপক্ষ মোঃ হোসেন ওই জমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দামার বিষয় গোপন রেখে তিনি স্থানীয় ইসরাফিল নামের এক ব্যক্তির কাছে জমিটি বিক্রি করে দেন। মামলা মোকদ্দার বিষয়টি প্রতিবেশী ইসলাফিলের নজরে এলে তিনিও ওই জমি নাম মাত্র টাকায় বিভিন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করে দখল বুঝিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেন। শুক্রবার রাতে মোঃ হোসেন ও ইসরাফিলের নেতৃত্বে তাদের ভোগলীয় জমি থেকে সড়ক সংলগ্ন ৬ শতাংশ জমি রাতের আধাঁরে জবর দখল করে মিজান ফরাজীকে ব্যক্তিকে দখল করে দেন। মিজান ফরাজী প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে রাতের আধাঁরে ওই জমি জবর দখল করে ঘর নির্মান শুরু করেন।
এসময় তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে প্রভাবশালী ওই চক্র তাদের ওপর হামলা ও মারধরের চেষ্টা করেন। পরে তিনি নিরুপায় হয়ে রাতেই শশীভূষণ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগ পেয়ে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নির্মান বন্ধ করে দিলেও থেমে যায়নি কাজ । প্রাভাবশালী ওই চক্র ফের শনিবার সকালে নির্মান কাজ শুরু করছেন। প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের অব্যহত হুমকি ধামকিতে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে তার পরিবার।
অভিযুক্ত মোঃ হোসেন জানান, রেকর্ড সুত্রে মালিক হয়ে তিনি ওই জমি বিক্রি করেছেন। কিভাবে ওই জমি তার নামে রেকর্ড হয়েছে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। অভিযুক্ত জবর দখলকারী মিজান জানান, ওই গ্রামের মোঃ হোসেন থেকে জমি খরিদ করে ঘর নির্মান করছেন। তবে রাতের আধাঁরে কেন করছেন জানাতে চাইলে তিনি আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শশীভূষণ থানার ওসি মিজানুর রহমান পাটোয়ারী জানান, ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে রাতেই পুলিশ পাঠিয়ে জবর দখল করে নির্মান কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।