প্রতিবেদন,মোঃ কাওছার ইকবাল, শ্রীমঙ্গল:
শ্রীমঙ্গলে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পৌরসভা কর্তৃক ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ ও ময়লার ভাগাড় অপসারণের দাবীতে আজও সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তারা নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করে বলে, শনিবার পর্যন্ত তারা সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচী চালিয়ে যাবে। দ্রুত এবং সুষ্ঠু সমাধানের কোন আশ্বাস না পেলে তারা রবিবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন ঘোষণা করা হবে। শ্রীমঙ্গলের কলেজ রোডস্থ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংলগ্ন বিশাল ময়লা ভাগাড়ের সামনে কোমলপ্রাণ শিক্ষার্থীরা প্রায় ১ ঘন্টা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে আল্টিমেটলি ঘোষণা করে।
কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বলেন, ময়লার ভাগাড় থেকে অসহনীয় দূর্গন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ার কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যহানিসহ পড়াশোনায় মারাত্মক ভাবে ব্যাঘাত ঘটছে। এই দূর্ভোগ থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে দ্রুত এই ময়লার ভাগাড়টি অপসারণের উদ্যোগ নিতে প্রশাসনসহ এলাকার জনপ্রতিনিধির প্রতি জোর দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
প্রায় দুই দশকের এই গণদাবির প্রতি এলাকার প্রায় ৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সচেতন ছাত্র ও যুবসমাজ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলন করে গেলেও এব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কার্যত কোন পদক্ষেপই লক্ষ্য করা যায় নি। ফলে প্রতিনিয়তই ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইতিহাস(সম্মান) ১ম বর্ষের ছাত্র নূরুল আমিন, দ্বাদশ(মানবিক) এর উম্মে নাফিসা মায়মুনাহ, দীপ্ত পাল, নাফিস আহমেদ নাঈম, শাহেদ আহমেদ রানা, একাদশ শ্রেণীর প্রিয়ন্তি দেবসহ আরো অনেকে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মোঃ মহসীন মিয়া মধু বলেন, শ্রীমঙ্গলস্থ জেটি রোড এলাকায় প্রকল্প চলমান অবস্থায় নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে বাধা সৃষ্টি করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে আদালতে রিটও করা হয়েছে। বিষয়টি সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ও এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্যও অবগত রয়েছেন।
মোবাইলে ফোনে আলাপ কালে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, এ ব্যাপারে আমি সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলাপ করেছি। বিশেষ করে এমপি মহোদয় দেশের বাহিরে অবস্থান করছেন। যাওয়ার ঠিক পূর্বেই স্যারের সাথে বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। উনি আসার পর বিষয়টি নিয়ে জরুরী সভায় বসব।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় জানান, যেহেতু এমপি মহোদয় বিদেশে সফরে যাওয়ার প্রাক্কালে আমাদের বলেছেন, তিনি সুন্দর একটি উদ্যোগ নেবেন ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের জন্য। আমরা অপেক্ষায় আছি, উনি আসার পরই আমরা বসে উনার দিক নির্দেশনা মোতাবেক আমরা ব্যবস্থা নেব।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় জানান, আমরা উন্নয়নের রূপকার যাকে বলে থাকি, আমাদের সুযোগ্য এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ আব্দুস শহীদ মহোদয়, ৩২ বছর যাবৎ তিনিই সকল সমস্যার সমাধান করে যাচ্ছেন। এই সমস্যার সমাধান আশাকরি উনিই করবেন। পৌরসভার ময়লা ফেলার জন্য দুইটি জায়গা আছে। একটি কলেজ রোডস্থ বর্তমান ময়লার ভাগাড়, অপরটি জেটি রোডে অবস্থিত। দুটি এলাকার জনগণই এমপি সাহেবের ভোটার। উনি সিদ্ধান্ত নিবেন কোন এলাকার জনগনের সমস্যা কম হবে।
এরা আমারও ভোটার। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ইউনিয়ন পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এখন ব্যারিকেড নেই, আমিই ভেঙে ফেলেছি। এখন বর্তমান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান উনার জনগণকে রক্ষা করবেন। পাশাপাশি আমরাও চেষ্টা করবো ভালো কাজটি করার জন্য।