মোঃ শান্ত খান ঢাকা জেলা প্রতিনিধি
সাভারে ঢাকা আরিচা মহাসড়কে চলন্ত গাড়ি থামিয়ে পুলিশ পরিচয়ে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ৬৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুটে নিয়েছে দুর্বৃওরা। এ সময় পুলিশ পরিচয়ে দুর্বৃওরা ওই ব্যবসায়ীকে হাত পা বেঁধে ব্যাপক মারধর করে চলন্ত গাড়ি থেকে রাস্তায় ফেলে দেয়। ঘটনাটি ১৭ জুলাই ঢাকা আরিচা মহাসড়কের সাভারের বলিয়ারপুরের মধুমতি মডেল টাউনের সামনে ঘটে। সেই দিন প্রাণের ভয়ে ওই ব্যবসায়ী বিষয়টি কাউকে না বললেও বুধবার তিনি সেই ঘটনার বিবরণ সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। স্বর্ণালঙ্কার লুট হওয়া ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যরা জানায়,আমিরুল ইসলাম নামের ওই স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ী বরিশাল সদরে স্বর্ণের ব্যবসা করতেন। ১৭ জুলাই বরিশাল থেকে রাজধানীর তাতিবাজারে একটি স্বর্ণের শোরুমে আসেন স্বর্ণ কিনতে। এসময় তিনি ৬৪ লাখেরও বেশি টাকা দিয়ে ৬৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার কিনে একটি গাড়িতে উঠে রাজধানীর গাবতলীতে আসেন। পরে তিনি বিকেল ৬টার দিকে গাবতলী থেকে মানিকগঞ্জের সিংগাইর যাওয়ার জন্য রইছ পরিবহনে সাভারের হেমায়েতপুরে আসার জন্য বাসে উঠেন। যাত্রীবাহী গাড়িটি ঢাকা আরিচা মহাসড়কের সাভারের বলিয়ারপুরের মধুমতি মডেল টাউনের সামনে এসে পৌছলে পুলিশের পোশাক পরিহিত তিন যুবক চলন্ত গাড়িটি সিগন্যাল দিয়ে থামিয়ে গাড়িতে উঠে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নামে মামলা আছে বলে তাকে হাতকড়া পরিয়ে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরে তার হাত-পা ও চোখ বেঁধে ব্যাপক মারধর করে তার ব্যাগে থাকা ৬৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার,নগদ কয়েক হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন লুটে নিয়ে রাতে টাঙ্গাইলের একটি রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে দুর্বৃওরা পালিয়ে যায়। ওইদিন রাতেই পথচারীরা ওই স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ীকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে দুর্বৃত্তরা যখন যাত্রীবাহী বাসে উঠে ওই ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পরায় তখন তিনি ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করলেও গাড়ি ভর্তি কোনো যাত্রী তার কথায় কর্ণপাত করেনি। এ ঘটনায় ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর পরিবার অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত লুট হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার বা এর সাথে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মহাসড়কে সন্ধ্যা নামার আগে এরকম দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ী চিকিৎসা নিয়ে এখন সিংগাইরে রয়েছেন। ব্যবসার মূলধন ৬৪ ভরি স্বর্ণ ডাকাতি হওয়ায় তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। লোমহর্যক এ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার আমিনবাজার পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই হারুনুর রশিদ বলেন, লুট হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।