তানোরে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে যুবক আটক, বেধড়ক মারপিট রামেকে চিকিৎসাধীন

সারোয়ার হোসেন,তানোর:

রাজশাহীর তানোরে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে পরকীয়া প্রেমিক কে আটক করে বেধড়ক মারপিটে মারাত্মক আহত হয়ে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রেমিক এক সন্তানের পিতা আরিফ বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত(১৫ অক্টোবর)রবিবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের (ইউপির) ভাগনা মধ্যপড়া গ্রামে ঘটে ঘটনাটি। এঘটনায় ওই রাতেই মেম্বার ইউপি যুবলীগের সভাপতি সেলিম ও প্রবাসীর ভাই রফাদফা করে স্ত্রীকে পিতা মাতার হাতে জোরপূর্বক তুলে দেন এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে প্রেমিককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেন। প্রেমিক আরিফের অবস্থা মারাত্মক বেগতিক দেখে রাতেই রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা ধীন রয়েছেন, অপর দিকে প্রবাসীর স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে পিতার বাড়িতে রয়েছেন। এঘটনায় পুলিশ ও মেম্বারের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য উঠে এসেছে। প্রবাসীর ভাই বলেন, রাতে আমার ভাবির ঘরে প্রবেশ করেন মোহনপুর উপজেলার ধুরইল মন্ডিত পাড়া গ্রামের আরিফ। সে মৃত বারিকের ছেলে। ঘরে প্রবেশের পর অনেক লোকজন জড়ো হয়। ঘরের খাটের নিচে ঢুকে যান আরিফ। টেনে হেঁচড়ে বের করার সময় মাথায় আঘাত পেয়ে ক্ষত হয় এবং রক্ত বের হওয়া শুরু হয়। এসময় উত্তেজিত জনগণ কিল ঘুষি মারেন। পুলিশের হাতে না দিয়ে মারপিট করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান কারা কি ভাবে মেরেছে আমি বলতে পারব না। মেম্বার সবকিছু জানে বলে দায় সারেন। মেম্বার ও ইউপি যুবলীগের সভাপতি সেলিম বলেন, সবকিছু হয়ে যাওয়ার পর আমি সেখানে গিয়েছিলাম এবং পুলিশও ছিল। আরিফের মাথা ক্ষত হয়ে রক্ত বের হচ্ছিল এজন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর প্রবাসীর স্ত্রীকে তার বাবা মায়ের হাতে তুলে দেয়া হয়। আপনি কিভাবে মিমাংসা করলেন ও আরিফ কে বেধড়ক পেটানো হল কেন জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি মিমাংসা করিনি, অনেকের কথায় ও প্রবাসীর দুই সন্তানের কথা বিবেচনা করে পিতা মাতার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে বলে তিনিও দায় সারেন। ধুরইল মন্ডিত পাড়া গ্রামের এক ভ্যান চালক জানান, রাত প্রায় একটার দিকে আরিফের বড় ভাই আমাকে হাসপাতাল নিয়ে যান। গিয়ে দেখি আরিফের মাথায় সাদা ব্যান্ডেজ দেয়া আছে। ডাক্তারেরা সাব জানিয়ে দেন রোগীকে বাঁচাতে হলে দ্রুত রামেক হাসপাতালে নিতে হবে। সাথে সাথে ভ্যানে করে বাড়িতে এসে প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র নিয়ে আমি ত্রি মোহনী মোড়ে নিয়ে যায়। সেখান থেকে গাড়ীতে করে রামেক হাসপাতালে নেয়। তিনি আরো বলেন,তানোর হাসপাতালে পুলিশ ছিল ও আরিফের মোবাইল নিয়ে জিম্মায় স্বাক্ষর করে পাঠায়। আরেকজন ব্যক্তি বলেন, অপরাধ করতে পারে তাই বলে অমানুষের মত মারবে এটা কোন ধরনের কথা। আরিফের মাথায় অগনিত সেলাই পড়েছে। সেলাইয়ের জন্য ১৭শ টাকার সুতা কিনতে হয়েছে। সে আশঙ্কা জনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আরিফের স্ত্রী জানান, সে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে, রাতে যখন নিয়ে আসে কথাবার্তা কিছুই বলতে পারছিল না। আমাদের ঘরে পাঁচ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। জানা গেছে, আরিফের সাথে প্রবাসীর স্ত্রীর মোবাইলে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের কারনে আরিফ মাঝে মধ্যেই প্রবাসীর স্ত্রীর বাড়িতে যাতায়াত করত এবং প্রবাসীর স্ত্রীও বিভিন্ন জায়গায় মিলিত হত। গত রবিবার দিবাগত গভীর রাতে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ করেন আরিফ। এসময় প্রবাসীর ভাই লোকজন ডেকে আরিফকে ঘর থেকে বের করে এলোপাথাড়ি ভাবে পেটান। মাথার কয়েক জায়গা ক্ষত ও কান দিয়ে রক্ত বের হওয়া শুরু হলে দ্রুত উপজেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। তানোর থানার এস আই ফরিদ বলেন, রাত প্রায় একটার দিকে ওসি স্যারের নির্দেশে সরনজাই ইউপির ভাগনা গ্রামে যায়। সেখানে গিয়ে আরিফকে পায়নি। প্রবাসীর স্ত্রী ছিল। মেম্বারসহ লোকজন প্রবাসীর স্ত্রী কে পিতা মাতার হাতে তুলে দেন। তবে আরিফকে প্রচুর মেরেছে। কোন অভিযোগ না থাকায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারিনি। তানোর থানার ওসি আব্দুর রহিম বলেন, ঘটনা জানার পর পুলিশ কে পাঠানো হয়েছিল। এঘটনায় কোন পক্ষ অভিযোগ করেন নি। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন