তানোরে বিসিআইসির ডিলার বাবু চোরাই পথে সার আমদানি করে বাড়তি দামে বিক্রি

তানোর প্রতিনিধি:

রাজশাহীর তানোরে বিসিআইসির সার ডিলার সমিতির সভাপতি পৌরসভার ডিলার আলহাজ্ব মোহাম্মাদ আলী বাবু কৃষি অফিসারের যোগসাজশে প্রতিনিয়তই চোরাই পথে সার এনে দাপটের সাথে বাড়তি দামে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরের দিকে একট্রাক সার নওগাঁ সান্তাহার থেকে আনার ঘটনা ঘটেছে। সরকারি বরাদ্দের সার মোকামে বাড়তি দামে বিক্রি করে বিভিন্ন গুদাম থেকে ট্রাকের ট্রাক সার এনে প্রকাশ্যে বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। অথচ মেমো ও রেজিস্ট্রার খাতাতে ন্যায্য দাম লিখে রাখছেন বলেও একাধিক কৃষকরা নিশ্চিত করেন। শুধু মাত্র ক্ষমতাসীন দলের তকমা ও সার ডিলার সমিতির সভাপতি হওয়ার কারনেই দাপটের সাথে এমন অনিয়ম করলেও রহস্য জনক কারনে কৃষি অফিসারের ভূমিকা নির্বিকার। এতে করে সার নিয়ে ডিলার ও অফিসের কর্মকাণ্ড নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে নীতিমালা অনুযায়ী সার বিক্রির জোর দাবি তুলেছেন কৃষকরা। জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ধরে আলু রোপনের আগ থেকে তানোর পৌরসভার বিসিআইসির সার ডিলার আলহাজ্ব মোহাম্মাদ আলী বাবু নিয়োমিত সার আমদানী ও পাচার করে কাড়িকাড়ি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন। শুধু মাত্র সার সমিতির সভাপতি ও কৃষি অফিসারের সাথে সখ্যতা আছে বলেই নাকের ডগায় এমন অনিয়ম করেও ধরা ছোয়ার বাহিরে। সোমবার দুপুরের দিকে চৌবাড়িয়া থেকে এক ট্রাক সার আসে তালন্দ বাজারে বাবুর ডিলার পয়েন্টে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, তালন্দ বাজারে বাবুর ডিলার পয়েন্ট যাওয়ার আগে ট্রাক থামে। ট্রাকের ডাইভারের কাছে জানতে চাওয়া হয় কোথায় থেকে সার আনা হচ্ছে তিনি বলেন নওগাঁ সান্তাহার থেকে সার আনা হয়েছে, কোন কাগজপত্র বা মেমো কিছুই নেই বলে ভূ দৌড় দেন ডাইভার। যে ট্রাকে সার আনা হয়েছে তার নম্বর ঢাকা মেট্রো- ট – ১৮-৯২৩৯ । কৃষকরা জানান, ডিলার বাবু মাথায় টুপি পরে যে ভাবে মিথ্যা কথা ও বাড়তি দামে সার বিক্রি করেন কল্পনাতীত। বাড়তি দাম নিবে কিন্তু মেমোতে লিখবে না। কিছু বললেই আমি এখানে চুরি করতে আসিনি। যতটুকু বরাদ্দ পাওয়া যায় কিছুই হবেনা। সরকার সার দিতে পারেনা, আমি কিভাবে দিব। কৃষি অফিসারের অনুমতি নিয়ে বিভিন্ন মোকাম থেকে বাড়তি দামে সার এনে বাড়তি দামে বিক্রি করছি। আমি তো লোকসান করতে আসিনি। আবার কিছু বলা হলেই তার পোষা বখাটেরা এসে গালমন্দ করেন। তার ডিলার পয়েন্ট পৌর এলাকার শেষে তালন্দ বাজারে। পৌর এলাকার মাঝে হলে অনেক সুবিধা হত কৃষকের। কারন কালিগঞ্জ থেকে তালন্দ আসা মানে ১০০ টাকা ভাড়া গুনতে হয়। যদি সারের সঙ্কট হত তাহলে বাড়তি দামে কেন পাওয়া যায়। আসলে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে ও চাষীদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি করতে বাবুর মত ডিলারেরা সিন্ডিকেট করে সঙ্কট তৈরি করে কৃষকের পকেট কাটছে। আর তাদের পকেট দিনের দিন ভারি হচ্ছে। আর এসবের জন্য দায়ী উপজেলা কৃষি অফিস। তারা কি জানেনা কি পরিমান আলু চাষ হয়, কি পরিমান সারের প্রয়োজন সবই জানা। কিন্তু অফিসার ও ডিলার মিলেমিশে সিন্ডিকেট করছে। ডিলার আলহাজ্ব মোহাম্মাদ আলী বাবু বলেন, কৃষি অফিসের অনুমতি আছে বলেই বরাদ্দের বাহিরে সার এনে কৃষকদের দেয়া হচ্ছে। আপনি নাকি দাম বাড়তি নিচ্ছেন জানতে তিনি জানান বাড়তি দামে কিনে আনলে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হবে এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার বলে দাম্ভিকতা দেখান এই ডিলার। কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, এভাবে সার নিয়ে আনার কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। কোন চাষী যদি নিয়ে আনে সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু বিসিআইসির ডিলার এভাবে সার আনতে পারবে না। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিল্লাল হোসেন বলেন, কৃষি অফিসার প্রতিবেদন দেয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন