মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
এবারের ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে প্রচুর পর্যটকদের সমাগম হবে চায়ের দেশ মৌলভীবাজারে। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পট। এ জেলায় শতাধিক পর্যটনস্পটের মধ্য মধ্যে রয়েছে- উঁচুনিচু পাহাড় ভাঁজে ভাঁজে সবুজের গালিচায় মোড়ানো চা-গাছ; পাহাড়ি ঝর্ণার কলতান; প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা একাধিক লেক। এবার ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে জেলার বিভিন্ন স্পটে অর্ধলক্ষাধিক পর্যটক ঘুরতে আসবেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রশাসন থেকে নেওয়া হহয়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মৌলভীবাজার জেলাটিকে সাজাতে কোনো কার্পণ্য করেনি প্রকৃতি। চা বাগানের সবুজ গালিচা, লাউয়াছড়া প্রাণপ্রকৃতি কিংবা হাওরের অথই জলÑ এসব নিয়েই পযর্টন জেলা মৌলভীবাজার। তবে অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং দর্শনীয় পর্যটন স্থানগুলোকে ঢেলে না সাজানোর কারণে প্রকৃতির এমন মায়াভরা আঙিনায় দিন দিন কমছে পর্যটক। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা হয়ে পড়েছে বেকার। অনেকেই কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন। এবার ঈদে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। মৌলভীবাজারের প্রধান পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- শ্রীমঙ্গলের উঁচুনিচু পাহাড়ে ভাঁজে ভাঁজে সবুজের গালিচায় মোড়ানো চা-বাগান, খাসিয়া পুঞ্জি, মণিপুরি ও ত্রিপুরাদের গ্রাম, বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, বাইক্কাবিল, হাইল হাওর, বধ্যভূমি ৭১, নিমাই শিববাড়ী, শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফিনলে চা বাগানের ভেতরে ডিনস্টন সিমেট্রি। এ ছাড়া রয়েছে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, ধলই এলাকার বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, রাজকান্দি বন খাসিয়া পল্লী, হাম হাম জলপ্রপাত, কলাবন, বড়লেখার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, হাকালুকি হাওর, রাজনগর উপজেলার কমলা রাণীর দীঘি, কাউয়াদীঘি হাওর ও জলের গ্রাম অন্তেহরি। জেলায় দেড় শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ বুকিং সম্পন্ন করেছে। ইতোমধ্যে হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ ও কটেজগুলো সাজানো-গোছানোর কাজ শেষ হয়ে গেছে। ঈদের টানা ছুটিতে ভ্রমণপিপাসুদের আগমনে ভালো ব্যবসার প্রত্যাশা কথা জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গলে পর্যটন সেবা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কাজী সামছুল হক। কয়েকজন হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা এখানে আসবেন। তাদের সেবা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অতিথির জন্য রিসোর্টগুলো সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। আশা করছি, এবার বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসবেন। শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক ও গ্রীনলিফ গেস্ট হাউজের স্বত্বাধিকারী এসকে দাশ সুমন বলেন, পর্যটন স্থানগুলো নতুন করে সাজিয়ে না তুলা হলে এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি না করা হলে পর্যটকরা এই জেলা ভ্রমণে বিমুখ হবেন। এতে দেশি পর্যটকরা বিদেশ ভ্রমণে ঝুঁকবেন। সরকার হারাবে বিপুল রাজস্ব। মৌলভীবাজার সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, ঈদের বন্ধে ভ্রমণ নির্বিঘ্ন করতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মৌলভীবাজারের স্পটগুলো বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে পরিকল্পনা করবে; আর জেলা পুলিশও সজাগ থাকবে।