মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (মাধবপুর) হবিগঞ্জঃ
উজ্জল হাসান খুব ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকতে পছন্দ তার। ছোট থেকেই রঙে রঙে নির্মাণ করতেন নিজের জগত। পাখি, পাখির বাসা, মাছ, গরু-ছাগল, ফুল-ফল এঁকে মাকে দেখাতেন। তার রঙের খেলায় প্রাণ পেতো নানান দৃশ্য। দেশীয় চিত্রকলা, এদেশের মাটি, মানুষ, আকাশ, সব কিছুই ফুটে উঠতো তার চিত্রকর্মে। তার পুরো নাম মোঃ জয়নাল আবেদিন উজ্জল তবে (উজ্জল হাসান) নামেই পরিচিত। তিনি বেড়ে উঠেছেন হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার রতনপুর গ্রামে, তার পিতার নাম আব্দুল খালেক।
বর্তমানে চারু আর্ট গ্যালারী নামে একটি আর্টগ্যালারী গড়ে তুলেন নামে যাহা গুলশান-২ ঢাকাতে অবস্থিত। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কিছু যৌথ প্রদর্শনীও রয়েছে গুণী এ শিল্পীর।
চিত্রশিল্পী উজ্জল হাসান জানান, ১৯৮২ সালে রতনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি ভর্তি হওয়ার সুবাধে স্কুল পাশের রাস্তায় কৃষ্ণচুড়া গাছের নিচে তখনকার সময় ট্রাকের পিছনে সুন্দর সুন্দর আর্ট করা ছবি ও লেখা তাকে আকর্ষণ করতেন। সেই থেকে তার ছবি আকার প্রতি ভালবাসা তৈরী হয়।
ভালে ছবি আঁকার কারণে তিনি স্কুলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি আর্ট প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেতেন। তার বড় ভাই ঢাকা গেলেই আমার জন্য রঙ-তুলি নিয়ে আসতেন। তার অনুপ্রেরণায় ছবি আকাঁর প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে যায়। তখন থেকেই অনেকে আগ্রহ নিয়ে ছবি আঁকা শিখেন।
তিনি মাধবপুর দক্ষিণাঞ্চলে ধর্মঘর ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৮৯ সালে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি হন। সেখান থেকে শিক্ষক ড. জাহাঙ্গীর আলম (বর্তমানে বিটিভির মহাপরিচালক) স্যারের অনুপ্রেরণায় উজ্জলের আরো ছবি আকার আগ্রহ বেড়ে যায়।
উজ্জল হাসান একজন দক্ষ রঙতুলির কারিগর। তার আঁকা ছবিগুলো যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। বাংলাদেশের মানুষের কৃষ্টি কালচার এদেশের সংস্কৃতি তার আঁকার মাধ্যমে বিদেশে এদেশকে রিপ্রেজেন্ট করে। উজ্জল হাসান একজন গুণী চিত্র শিল্পী।
গেল ২০২০ মজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্গা যৌথ আর্ট প্রর্দশনী ক্যাম্পিং এর বাংলাদেশের ১০ জন চিত্রশিল্পী ও শ্রীলঙ্গা ১০ জন চিত্রশিল্পী অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি জাতীয় পর্যায়ে ১০টি আর্ট ক্যাম্পিং এ অংশগ্রহন করেন।
তার চিত্রকর্ম সম্পর্কে এদেশে অনেক গুণি শিল্পীরা তার প্রশংসা করেন, উজ্জল হাসান খুব ভোলো ছবি আঁকেন। ঢাকার গুলশান-২ এলাকায় তার প্রতিষ্টানে এসে অনেক বিদেশীরা তার কাছ বিভিন্ন গ্রাম বাংলার ছবি ও মানুষের কৃষ্টি কালচার একে নিয়ে যান। বর্তমানে তিনি আইসল্যান্ডের একটি আর্ট এক্সিভিশনের আমন্ত্রণ পান সেখানে শ্রীঘ্রই যোগ দিবেন।
তিনি আরো বিশেষ করে তার আঁকা অয়েল এবং এর্কেলিক কালারের ছবিগুলো অসাধারণ। বাংলার মানুষের জীবন তার তুলিতে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে ওঠে। এছাড়া তার ছবিগুলো নিয়মিত আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে প্রদর্শিত হয়। আমাদের দেশের সংস্কৃতি খুব সহজের তার ছবির মাধ্যমে বিদেশে পরিচিতি পায়। এটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের। উজ্জল শুধু মাধবপুর উপজেলার গর্ব না, তিনি সারা দেশের গর্ব।তিনি সিলেট বিভাগের ছেলে হিসেবে বৃহত্ত্বর সিলেটকে তিনি ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছে এরই মধ্যে জাফলং, মাধবকুন্ড ও হবিগঞ্জের চা বাগানের ছবিগুলো তার চিত্রকর্মে ফুটিয়ে তুলেছেন।
উজ্জল শুধু দেশেই নয় আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বেশ কিছু যৌথ প্রদর্শনী করেছেন। এর মধ্যে জে.বি স্কুল অব ফাইন আর্টস, আগরতলা, ইণ্ডিয়ায় Group Exhibition of Painting, Sculpture & Craft আমন্ত্রণে অংশগ্রহণ করেন গত ০৫ মে ২০২৪ সালে। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার কালার সোসাইটি আর্ট এক্সিভিশন সুইজারল্যান্ড, ২০১৯ আমন্ত্রণ পেলেও বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস কোবিড-১৯ কারণে যেতে পারেন নি।