কামরুল হাসান সাহান, টরন্টো, কানাডাঃ
রক্ষা পেতে সিলেটবাসীকে সচেতন এবং ঐক্যবদ্ধ হতে হবে;
‘সিলেটে বারবার বন্যা: কারণ ও প্রতিকার’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয় টরন্টো শহরের ডেনফোর্থ এভিনিউয়ের বাংলাদেশ সেন্টারে। ১৫ জুলাই (সোমবার) কানাডায় বসবাসরত সিলেটবাসীর উদ্যোগে ‘জাগো সিলেট, বাঁচাও সিলেট’ স্লোগানে এই আয়োজন করা হয়।
মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ শাহরীয়ার কোরেশী কি নোট স্পীকার হিসাবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া নাসার পরিবেশ বিজ্ঞানী আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বন্যার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে কথা বলেন। তাঁরা বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের সিলেট ও ভারতের মেঘালয়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। সিলেটে আকস্মিক বন্যা অতিবৃষ্টির কারণে হলেও আরও কিছু কারণ রয়েছে। দিঘী-পুকুরের শহর সিলেটে জলাশয় নেই, হাওড়ে আবাস গড়ে উঠেছে। শহর এলাকায় বাড়িঘর তৈরির ফলে পানি আর গ্রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। সুরমা-কুশিয়ারাসহ প্রায় নদীই নাব্যতা হারিয়েছে। কোনও কোনওটির অস্তিত্ব প্রায় বিলীন হয়ে গেছে, বড়ো বড়ো খালবিলও নেই, এসব দখলে/দূষণে আক্রান্ত। জলাশয়-খালবিল মরে গিয়ে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে বারবার বন্যা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে।
তাঁরা বলেন, সিলেটসহ হাওড় এলাকার অপরিকল্পিত উন্নয়নও এর পেছনে দায়ী। ফলে অতিরিক্ত পানি নদীপথে হাওড় থেকে বের হয়ে মেঘনা বা যমুনা হয়ে বঙ্গোপসাগরে চলে যেতে পারে না। ভৈরব এবং আশুগঞ্জে অপরিকল্পিত সেতু এবং মিঠামইন বিনোদন সড়ক এই বন্যার একটা বিশেষ কারণ।
আলোচকবৃন্দ বলেন, কয়েক হাজার লোকের সুবিধার জন্য মিঠামইন সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৮শত ৭৪ কোটি টাকা। কিন্তু কয়েক কোটি মানুষের সিলেট বিভাগের ক্ষতি হয়েছে শুধু এবারের বন্যায় ২৩ শত ৯৮ কোটি টাকা। তাঁরা সরকারের কাছে কয়েকটি দাবি জানিয়ে বলেন, ঘন ঘন সেতু নির্মাণ করে মিঠামইন সড়কের সংস্কারসহ ভরাট হয়ে যাওয়া প্রধান প্রধান নদীগুলো খনন করে নাব্যতা বাড়াতে হবে, খাল-নালা খনন করতে হবে, বড়ো বড়ো নদী ও খালের উভয় তীরে বেড়িবাঁধ দিয়ে বন্যার প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে হবে।
সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত সভায় শতাধিক সিলেটবাসী উপস্থিত ছিলেন। এসময় আলোচনায় অংশগ্রহনসহ উপস্থিত ছিলেন আখলাক হোসেন, রেশাদ চৌধুরী, আব্দুল আহাদ খন্দকার, সাদ চৌধুরী, সাইয়েদ আব্দুল গফফার, খন্দকার হামিদ আজিজ, নেওয়াজ চৌধুরী সাজু, মাহবুব চৌধুরী রনি, প্রফেসর আতাউর রহমান, চেয়ারম্যান মিছবাহুল কাদির ফাহিম, আহমদ মোস্তাকিম, শামসুল আবেদিন, হেলাল চৌধুরী, ডা: সায়েফ আহমদ, সাইদুন ফয়ছল, আব্দুল গফরান চৌধুরী, মইনউদ্দিন চৌধুরী, দুলাল আহমদ চৌধুরী, ফয়জুল হক চৌধুরী, আব্দুল মুমিত, খসরুজ্জামান চৌধুরী দুলু, লায়েকুল হক চৌধুরী, আতিউল হক, ওমর ফারুক, এডভোকেট আবু সাদেক লিপন, আবদুল বাতিন ফয়সল, কামরুল হাসান সাহান, সাব্বির চৌধুরী লিটন, এনামুল হক কাওসার, কুহিনূর তানভীর, এজাজ খান, সাহাব উদ্দিন, শরফুল ইসলাম, আব্দুল হক, কবি আবেদ ফয়ছল, ইলিয়াছ খান, জাকারিয়া চৌধুরী, আব্দুল হামিদ, মুর্শেদ আহমদ মুক্তা, মামুন হুসাইন, ম আজিজ, বায়েজিদ মাহমুদ ফয়সল প্রমুখ।
তাঁরা সকলকে পরিবেশ সচেতন এবং বন্যামুক্ত করতে সিলেটবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।