ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার আঞ্জুরহাটে প্রতারনা করে রিকশা চালক সমবায় সমিতির অফিস ঘর ভিটে জবর দখল করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী আবুল কালাম খলিফা নামের এক আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালে তিনি সমবায় সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের সই স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া রেজুলেশন দেখিয়ে এটোনীর মাধ্যমে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ওই অফিস ভিটে হাতিয়ে নেন।
এ ঘটনায় গতকাল রোববার সকালে কয়েকশত রিকশা চালক তাদের অফিস কক্ষের ভিটে জবর দখলকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করতে স্থানীয় আঞ্জুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।
জানা যায়, ১৯৮৭ সালে রিকশা চালক সমবায় সমিতির নামে আঞ্জুরহাটে একটি ঘর ভিটে খরিদ করে সমিতির অফিস কার্যালয় নির্মান করেন। এবং ওই অফিস কক্ষে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যান। ২০০২ সালে উপজেলা পর্যায়ে রিকশা চালক সমিতির কার্যক্রম বিলুপ্ত হলে ওই সমিতির ঘর সাবেক সমিতির মেম্বার আবুল কালাম ডাক্তারের জিম্মায় ভাড়ায় দেয়া হয়। ২০২৩ সনে স্থানীয় প্রভাবশালী আবুল কালাম খলিফা উপজেলা রিকশা চালক সমবায় সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের স্বাক্ষর জাল করে একটি ভুয়া রেজুলেশন তৈরি করে এটোনির মাধ্যমে সমিতির ঘর ভিটেটি তার নামে হাতিয়ে নেন। ওই বছরেই ফের তিনি ভূয়া কাগজে হাতিয়ে নেয়া ঘর ভিটেটি তার স্ত্রী ফহিমা বেগমের নামে দলিল করে জবর দখল করে ভোগ দখল শুরু করেন।
পরে ২০২৪ সনে রিকশা চালক সমবায় সমিতির সদস্যরা তাদের ঘর ভিটে ফিরিয়ে দিতে চাপ দিলে তিনি তার স্ত্রীর নামে দলিল দেয়া ঘর ভিটেটি জৈনক আবদুল কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তির কাছে গোপনে ২৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন। প্রতারনার মাধ্যমে রিকশা চালক সমবায় সমিতির ঘর ভিটে বিক্রির ঘটনাটি প্রকাশ হলে সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে তিনি গা-ঢাকা দেন। এঘটনায় রোববার রিকশা চালক সমবায় সমিতির সদস্যরা তাদের হাতিয়ে নেয়া ঘর ভিটে ফিরে পেতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
রিকশা চালক শ্রমিক নেতা আবদুল মালেক জানান, হতদরিদ্র রিকশা চালকের কাছ থেকে ১০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে আঞ্জুরহাটে রিকশা চালক সমবায় সমিতির নামে একটি ঘর ভিটে খরিদ করা হয়। ২০২০ সনে সমিতির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়লে আবুল কালাম খলিফা প্রতারনা করে ভূয়া কাগজের মাধ্যমে ওই ভিটে তার নামে হাতিয়ে নেন।
উপজেলা রিকশা চালক সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম বাচ্চু জানান, কিভাবে আবুল কালাম খলিফা সমবায় সমিতির ঘর ভিটে নিজের নামে এটোনি নিয়েছেন তা আমার জানা নাই।
অভিযুক্ত কালাম খলিফা জানান, উপজেলা রিকশা চালক সমবায় সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক এটোনির মাধ্যমে ওই ঘর ভিটে তাকে হস্তান্তর করেছেন। ওই এটোনির মাধ্যমে তিনি ওই ভিটির মালিক হয়েছেন।