ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিগত দেড় যুগের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে উজ্জীবিত অবস্থায় রয়েছে বিএনপি।
মাত্র এক মাস সময়ে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারামুক্ত হয়েছেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে; একের পর এক মামলা থেকে খালাস পেয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে; নেতাকর্মীরাও রাজনৈতিক মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসছেন। সব মিলিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে।
বিরাজনীতিকরণের সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ঢাকা জেলা বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর খোরশেদ আলম।
দেশের রাজনীতির ক্রান্তিলগ্নে ও দুঃসময়ে সাভারের বিএনপির হাল ধরে মাঠে ছিলেন সক্রিয়। দলের বিভিন্ন দিবস, সভা-সমাবেশও করেছেন নেতাকর্মীদের নিয়ে। এবার এই নেতাকে নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন নির্যাতিত নেতাকর্মীরা।
দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত ১৬ বছর দলের নেতাকর্মীরা হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। এসবের মধ্যে পাশে থেকে খোরশেদ আলম দিয়েছেন সাহস। কারাবন্দী নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের দায়িত্বসহ দলের নেতাকর্মীদের কারামুক্তির ব্যবস্থাও করেছেন তিনি।
দেশের রাজনীতির ক্রান্তিলগ্নে ও দুঃসময়ে সাভারের বিএনপির হাল ধরে মাঠে ছিলেন সক্রিয়। দলের বিভিন্ন দিবস, সভা-সমাবেশও করেছেন নেতাকর্মীদের নিয়ে। এবার এই নেতাকে নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন নির্যাতিত নেতাকর্মীরা। তাদের আশা দল থাকে নিরাশ করবে না দুঃসময়ের এই নেতাকে। আগামীতে সাভার পৌর মেয়র হিসেবেও দেখতে চান তারা।
নেতা কর্মীদের অভিযোগ—বিগত ১৬ বছর ধরে এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন অনেক নেতা। অনেকে আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে আপোষ করে ব্যবসা-বানিজ্যে নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। বিএনপির পরিচয় পর্যন্ত দেননি। ছাত্রদল, যুবদলের নেতাকর্মীরা মিথ্যা মামলা নিয়ে আদালত পাড়ায় ঘুরেছেন, খবর পর্যন্ত নেননি কেউ।
নেতাকর্মীদের এমন আশা এবং অতীত-বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আজ গণমাধ্যমকে সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন সাভারের বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম।
বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম বলেন, ২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হলে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেন দেশের গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এরই মধ্যে অপশক্তিরা ষড়যন্ত্র শুরু করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়। শেষে ২০০৮ সালে প্রহসনের নির্বাচনে দেশের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে জোর করে নির্বাচনে হেরে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, অপশক্তির কাছে হেরে যায় গণতন্ত্র, এরপর থেকে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের উপর চালানো হয় জেল জুলুম নির্যাতন। গণতন্ত্রের সূর্যসন্তান তারেক রহমান কে পাঠানো হয় নির্বাসনে।
তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে করা হয় কারাবন্দি। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকার তিলে-তিলে শেষ করতে চেয়ে ছিল জিয়া পরিবারকে। কিন্তু জনগণ ও সৃষ্টিকর্তার রহমতে এবং জিয়ার সৈনিকদের অবিচল আস্থার কারণে আজ দেশ মুক্ত, দেশের গণতন্ত্র মুক্ত।
বিগত ১৬ বছরে দেশে কোন সুষ্ট নির্বাচন হয়নি বলে উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, দিনের ভোট হতো রাতে, হাজার হাজার বিএনপির নেতাকর্মী হত্যা গুম করা হয়েছে। বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়াকে কারগারে মেরে ফেলতে চেয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান ও কনিষ্ট পুত্র আরাফাত রহমান খুকুকে ক্ষমতাসীন মঈন উদ্দিন-ফকরুদ্দীনের নির্মম নির্যাতনের পর চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়। সেখানে আরাফাত রহমান খুকু শহীদ হন। খুকুর লাশ যখন দেশে আনা হল তখন স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার ক্ষমতায়। অথচ ভাইয়ের জানাজায়ও অংশ নিতে দেননি তারেক রহমানকে। এর চেয়ে নির্মম আর কি হতে পারে!
তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান আর খালেদা জিয়া মা-ছেলের দেখা হয়নি ১৬ বছর ধরে। বিরোধীদল গুলোর উপর নির্যাতন চালিয়ে কন্ঠরোধ করা হয়েছে। প্রতিবাদ করলে রাজাকারের ট্যাক লাগানো হয়েছে, উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। সর্বশেষ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সহস্রাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনা।
বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শহীদ জিয়ার আদর্শকে বুকে ধারণ করে রাজনীতি করেছি। আমার কাছে পদের চেয়ে দল বড়। বিএনপি আমার পরিবার, রাষ্ট্র নায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে দেশ মাতা খালেদা জিয়াকে দেশের সর্ব্বোচ্চ সম্মানে যতদিন নিতে পারব না, ততদিন আমি রাজপথ ছাড়ব না।