ধান ক্ষেতে পানির অভাব ও পোকার আক্রমণ
মোঃ শফিকুল ইসলাম দুলাল, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁও জেলা দেশের উত্তরের কৃষি নির্ভর একটি জেলা। আমন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার কৃষকেরা। সদর উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায় চারা রোপন ও ধানের পরিচর্যা করতে শুরু করেছেন কৃষক। কিন্তু বৃষ্টির পানির অভাব ও পোকার আক্রমনে দুশ্চিন্তায় পরেছেন কৃষকেরা। কিছু কিছু এলাকায় পানির অভাবে ধানক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে আছে। এতে করে মারাত্মক সমস্যায় পরেছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা। ফলে বেশ কিছু কৃষককে শ্যালোমেশিন, বরেন্দ্র গভীর নলকূপের সাহায্যে পানি দিতে দেখা যায়।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দানারহাট, বরুনাগাঁও ও রানিশংকৈল, শীবগঞ্জ, নারগুন, বেগুনবাড়ি, খোঁচাবাড়ি, পীরগঞ্জ, হরিপুর উপজেলা সহ রুহিয়া থানার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় আমন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি জাতের ধান আবাদ করা হবে বলে জানান কৃষকেরা। তবে বৃষ্টির পানির অভাবে উচু জমিতে লাগানো ধানের ক্ষেত শুকিয়ে গেছে। এতে করে বৃষ্টির পানির অপেক্ষায় রয়েছেন এ জেলার কৃষকেরা।
সদর উপজেলার ভেলজান গ্রামের কৃষক শামসুল আলম জানান, তিনি এ বছর আড়াই একর (২৫০ শতক) জমিতে আমন ধান লাগিয়েছেন। কিন্তু প্রচন্ড রোদে আর বৃষ্টি না হওয়াতে বিপাকে পরেছেন। কারণ বৃষ্টির পানি না হওয়ায় আমনের জমিগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় তিনিও দুশ্চিন্তা করছেন।
সদর উপজেলার সালন্দর সিংপাড়া এলাকার কৃষক জয়নাল আবেদীন জানান, প্রত্যেক বছরের মত এ বছর তিনি ৩ একর (৩শ শতক) জমিতে আমন লাগিয়েছেন। তবে বৃষ্টির পানির অভাবে সমস্যায় পরেছেন। এছাড়াও কিছু কিছু ধানের ক্ষেতে পোকার আক্রমনও নতুন দুশ্চিন্তা তৈরী করেছে। বালাইনাশক ছিটানোর পরও পোকার আক্রমন কমছে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাশেল ইসলাম জানান, জেলায় এ বছর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরে ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: সিরাজুল ইসলাম জানান, ঠাকুরগাঁও জেলা অন্যান্য ফসলের ন্যয় ধানের জন্যও বিখ্যাত। প্রচুর পরিমানে ধান এ জেলায় উৎপাদন হয়। প্রত্যেক বছর আমন মৌসুমে কৃষকদের যাবতীয় পরামর্শ ও সেবা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রদান করা হয়। এ বছরও দেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টির পানির অভাবে একটু সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে উচু জমিগুলোতে পানি থাকছে না। তবে বৃষ্টির পানি না হওয়া পর্যন্ত সম্পুরক সেচ ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। সেচ পাম্পগুলিও সচল রয়েছে। কিছু এলাকায় মাজরা পোকার আক্রমন হলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে লক্ষ্য-মাত্রার অতিরিক্ত ধান উৎপাদন হবে এবং কৃষকেরা এ বছরও ধানের ন্যর্য্য মুল্য পাবেন বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।