সুনামগঞ্জে সহপাঠীর মারধরের শিকার এক শিক্ষার্থী 

নিজস্ব প্রতিবেদক;

সুনামগঞ্জে কথা কাটাকাটির জের ধরে এক স্কুল-ছাত্রের বিরুদ্ধে সহপাঠীকে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ঘটে যাওয়া এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নির্যাতনের স্বীকার ওই ছেলে সুনামগঞ্জ সদরের এইচ.এম.পি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ভিডিওতে দেখা যায়, স্কুল ড্রেস পরা এক শিক্ষার্থী হাতে থাকা লোহার দণ্ড দিয়ে দু’জনকে মারধোর করছে। মারধোরের পরে কান্না করতেও দেওয়া হয়নি সেই ছেলেকে। চিৎকার করলে আরও মারবে এমনটাও বলতে শোনা যায়। এই সময় মারধোরের ভিডিও করতেও বলা হয়। ভিডিওতে শেষ পর্যায়ে সঙ্গীয় একজনের কথায় বন্ধ করা হয় ভিডিও ধারণ ।

নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম কামরুল ইসমাল সাকিব। সে শহরের নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও মৃত মোহাম্মদ রহিম উদ্দিনের ছেলে। ভিডিওতে মারতে থাকা শিক্ষার্থীর নাম রিয়াম। সে শহরের বড়পাড়া এলাকার বাসিন্দা আবুল প্রকাশ মাস্টারের ছেলে। দুইজন একই ক্লাসের শিক্ষার্থী।

নির্যাতনের শিকার সাকিব বলেন, স্কুলে সাধারণ কথা কাটাকাটি থেকে এই ঘটনার সূত্রপাত। সাকিব স্কুলে যাওয়ার পর ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এই কথা কাটাকাটির জেরে স্কুলের ৮-৯ জন শিক্ষার্থী নিয়ে আসে রিয়াম। এ সময় আমার এক বন্ধুকে দিয়ে আমাকে ডেকে নেওয়া হয়। এইচ.এম.পি উচ্চ বিদ্যালয় ও মডেল মসজিদের মাঝামাঝি স্থানে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত তারা আমাকে মারধোর করে। মারার সময় কান্না করেতে বা চিৎকার করতেও নিষেধ করে। প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয় তখন। মারধোরের শেষ পর্যায়ে সুনামগঞ্জ মডেল মসজিদের একজন মুসল্লিকে রিয়াম জানায় – আমরা নাকি নেশা করছিলাম তাই তারা মেরেছে।

নির্যাতিত শিক্ষার্থীর মা খাফিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী গত ৪০ দিন আগে মারা গেছেন। আমি এখন আমার এই ছেলেকে নিয়েই বেঁচে আছি। আমি আমার ছেলেকে যারা মারধোর করেছে তাদের সুষ্ঠু বিচার চাই।

নির্যাতিত শিক্ষার্থীর চাচা মহিম উদ্দিন বলেন, আমার ভাতিজাকে যেভাবে মেরেছে আমি এর বিচার চাই। ও যখন আমাদের কে বলেছে মারমারির কথা তখন আমরা সাধারণ মারামারি ভেবে নিয়েছি। আজকে ভিডিওটা দেখে আমরা আশ্চর্য হলাম।

ভিডিওতে মারধর করা শিক্ষার্থী রিয়ামের ভাই বাবলা বলেন, ভিডিওটি দেখেছি এবং আমরা পারিবারিকভাবে বসে বিষয়টি শেষ করার জন্য কথা বলছি ।

এই ঘটনার ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় এখনও কেউ অভিযোগ জানায়নি । অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন