শ্রীমঙ্গলের সাবেক মেয়রের বাসায় হামলার ঘটনায় ৩৪ জনের নামে মামলা


মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ২০২১ সালে পৌরসভা নির্বচনের প্রচারণা চলাকালে মেয়র প্রার্থী ও বিএনপি নেতা মো. মহসিন মিয়া মধুর বাসভবনে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের ৩৪ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মৌলভীবাজার আদালতে সাবেক মেয়র মহসিন মিয়ার কর্মচারী ইউসুফ মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময়ে বিচার বিভাগ দলীয়করন থাকায় তখন মামলা করা যায়নি বলেও জানিয়েছেন মামলার বাদী উইসুফ মিয়া।

মামলায় আসামীরা হলেন, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্বারিকা পাল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হক (৫৫), জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিসবাহুর রহমান (৬০), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র ফজলুর রহমান (৫০), যুবলীগ নেতা ও কমলগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জুয়েল আহমেদ (৪০), শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ আলী (৬০), শিক্ষক জহর তরফদার (৪৮), এস কে দাশ সুমন (৪৫), জেলা যুবলীগ নেতা সৈয়দ রেজাউর রহমান সুমন (৪৮), শ্রীমঙ্গল উপজেলা যুবলীগের আকরামুল হক সোহাগ (৪৫), রোমান খান (৪২), তানভীর আহমেদ নাঈম (২২), আব্দুল মতিন (৪৮), আশিকুর রহমান সাগর প্রকাশ স্টেপ সাগর (২৪), আইয়ুবুর রহমান আকাশ (২৮), উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন রাহিদ (৪৫), তামিম মিয়া (৪০), সাদিকুল ইসলাম (৩৫), এ এফ এম হিমেল (৪০), ১৯. রাজু দেব রিটন (৩২), ২০. আকাশ দেব জুয়েল (২৮), ২১. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী আমিন (৩৫), ২২. পাবেল মিয়া (৪২), কৌশিক ভট্টাচার্য্য (৪০), কাসুম মিয়া (৪২), পংকজ নাগ (৪৫), আজিজুল রহমান নাঈম (২৬), সুমেল চৌধুরী (৪০), উজ্জ্বল কান্তি দাশ (৩০), মোসাহিদ মিয়া (৩০), হারুনুর রশিদ (৫০), দীপ সাগর (২৫), তাহের খান মুন্না (৩৫), আবুল মাসুম রনি (২৫), কায়েস আহমেদ (৩৫)।

এই মামলার স্বাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৪ জন, মো. মহসিন মিয়া, মুরাদ হোসেন সুমন, মোশাররফ হোসেন রাজ, রুকন উজ জামাম শাহাদাৎ হোসেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা নির্বাচনে খেজুর গাছ প্রতিক নিয়ে সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মহসিন মিয়া বিজয়ী হন। সেই সময়ে মহসিন মিয়ার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা সৈয়দ মনসুরুল হক, নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধীতা করেন তিনি।

তারা নির্বাচন প্রচার-প্রচারণা চলাকালীন সময়ে মহসিন মিয়ার সমর্থককে বিভিন্নভাবে ভয় ভীতি ও হত্যার হুমকি প্রদান করিয়াছিল। এছাড়াও আসামীগণ শতাধিক মোটর সাইকেলযোগে মহসিন মিয়ার বাসার গেইটের সামনে আসিয়া রাস্তা ব্যারিকেড দিয়া বাসা ঘেরাও করিয়া উশৃঙ্খল আচরণসহ বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দিয়া গালাগালি করেছে এবং স্বাক্ষীর বাসার ভিতরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাইয়া ও এলোপাথারি ঢিল ছুড়িয়া এক অরাজকতা সৃষ্টিপূর্বক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করিয়া এলাকায় এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
মামলায় উল্লেখিত ২নং আসামী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ৩নং আসামী মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ও ৪নং আসামী কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র থাকা অবস্থায় এবং ৬ নং ও ১২নং আসামী সরকারি কর্মচারী থাকা স্বত্বেও তাহারা প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করিয়া ১নং আসামীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা সহ ১নং স্বাক্ষীর কর্মী সমর্থকগণকে হুমকি প্রদান করেন।
৬ নং এবং ১২নং আসামী সরকারি কর্মচারী হইয়াও তারা সদা সর্বদা নৌকা প্রতীকের পক্ষে সকল সরকারি কর্মচারীগণকে ভয়-ভীতিসহ চাকুরী হারানোর হুমকি দিয়া নির্বাচনকে প্রভাবিত করিয়া প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি পালন করেন।

শেয়ার করুন