আরবান প্রাইমারী হেলথ সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প পীরগঞ্জ শাখায় দুর্নীতির অভিযোগ

মোঃ ফারজুল ইসলাম, পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:

পীরগঞ্জ পৌর এলাকায় স্বল্পমুল্যে স্বাস্থ্য সেবায় কর্মরত এনজিও ‘উন্নয়ন’ এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ওয়াজেদ আলী প্রামানিকের বিরুদ্ধে সোয়া ডজন দূর্নীতির অভিযোগ করেছেন পীরগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রহিম প্রামানিক। গত ১৪ অক্টোবর অভিযোগটি ‘আরবান প্রাইমারী হেলথ সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প-২য় পর্যায়’ এর প্রকল্প পরিচালককে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ তদন্তে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে দেশের পৌর এলাকায় স্বল্পমুল্যে মা ও শিশুসহ সকলের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে ‘আরবান প্রাইমারী হেলথ সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প-২য় পর্যায়’ গ্রহন করা হয়। পীরগঞ্জ পৌরসভায় ‘উন্নয়ন’ নামের একটি এনজিও গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী মোট ৬৪ জনকে নিয়ে কাজ শুরু করে। পীরগঞ্জ পৌর সদরেই এনজিওটির অধীনে গর্ভবতী মায়েদের সিজারও করা হয়ে থাকে। এনজিওটিতে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন পদে নিয়োগের সময় পীরগঞ্জ শাখার প্রকল্প ম্যানেজার (পিএম) ওয়াজেদ আলী প্রামানিকের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ উঠে। গত দেড় বছরে তার বিরুদ্ধে ভুয়া সনদে চাকরী প্রদান, ভুয়া বিলভাউচারে সরকারের অর্থ আত্মসাত, মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রদানে উৎকোচ গ্রহন, হাল্কা ছলছুতোয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে চাকুরীচ্যুতি,বেতনবিলি সীটে অগ্রিম স্বাক্ষর এমনকি চাকরী না করলেও অগ্রিম স্বাক্ষর নিয়ে সেই টাকা আত্মসাত, স্থানীয়ভাবে কেনাকোটায় দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে গাইনী ডাক্তার ও ক্লিনিক্যাল ম্যানেজারকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে নিয়োগের ঘটনা চাউর হয়েছে। পাশাপাশি পিএম এর স্ত্রী কর্মচারী না হয়েও তাকে এবং তার স্বজনদেরকে প্রশিক্ষণে পাঠিয়েছেন।

প্রকল্পটির পীরগঞ্জ শাখার সুপারভাইজার মিজানুর রহমান বলেন, পিএম’র বিরুদ্ধে আমরা বিগত দেড় বছরে কোন প্রতিবাদ করতে পারিনি। মুখ খুললেই তিনি চাকুরীচ্যুতি ও মানসিকভাবে হেনস্থা করতেন। তাই আমরা প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার, পীরগঞ্জ পৌর নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছি। আমাদের সকলের অভিযোগ শুনে প্রোগ্রাম অফিসার আমাদের প্রকল্প পরিচালকের কাছে অভিযোগগুলো লিখিতভাবে তুলে ধরেছেন।

পিএম ওয়াজেদ আলী প্রামানিক তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে চাকুরী করে আসছি। পৌর নির্বাহী স্যার কয়েকজনের কাছে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে আমাকে প্রকল্পে নিয়োগ দিতে বলে। আমি তাতে রাজী না হলে তিনি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, অভিযোগ তদন্তে মন্ত্রনালয় থেকে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে এলে আমার বিরুদ্ধে নয় বরং অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রহিম প্রামানিক বলেন, সরকারের টাকায় গৃহীত প্রকল্পের লক্ষ্য যেন পুরণ হয়, সে লক্ষ্যেই আমি পিএম ওয়াজেদ আলী প্রামানিকের বিরুদ্ধে সোয়া ডজন দূর্নীতির অভিযোগ এনে প্রকল্পের পিডি স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। তার দুর্নীতি, লুটপাটে প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। সরকারি স্বার্থ রক্ষায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ করেছেন।

শেয়ার করুন