রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণসহ চার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। ‘স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি (স্বারক)’ নামের একটি সংগঠন ‘বঙ্গভবন ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি’ ব্যানারে মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। ‘সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির’ চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ, সংবিধান বাতিল, বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠন এবং আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করা।
শহীদ মিনারে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের জমায়েত
পাঁচ দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আল্টিমেটাম: একই দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, সংবিধান সংশোধন, বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধসহ মোট পাঁচ দফা নতুন দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
মঙ্গলবার বিকেল সোয়া পাঁচটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। একইসঙ্গে অবিলম্বে এসব দাবি মেনে নেওয়া না হলে শিগগিরই রাজপথে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো:
১. অনতিবিলম্বে ৭২ এর সংবিধান বাতিল করতে হবে। সে জায়গায় ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পক্ষ থেকে নতুন করে সংবিধান লিখতে হবে।
২. এই সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। তাদেরকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে।
৩. এই সপ্তাহের মধ্যে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দীনকে পদচ্যুত করতে হবে।
৪. জুলাই বিপ্লব ও গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের আলোকে ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।
৫. ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। এসব নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হয়েছিল তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। একই সাথে তারা যেন ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে কোনোভাবেই প্রাসঙ্গিক হতে না পারে ও নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেজন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ
স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির সংগঠক মনিরুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়েছে। সেই আওয়ামী লীগের নিযুক্ত রাষ্ট্রপতি তাঁর পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বহু আগেই। এই রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে হবে। দেশে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে এবং অবশ্যই সন্ত্রাসী বাহিনী আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, রাষ্ট্রপতিকে এই সপ্তাহের মধ্যেই পদত্যাগ করতে হবে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ, মুজিববাদী মিডিয়া-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সকল সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, কার কথা শুনে ও কার চক্রান্তে রাষ্ট্রপতি উচ্চারণ করছেন যে, তার কাছে পদত্যাগপত্র নাই। আমরা ফ্যাসিস্ট চুপ্পুসহ সব ফ্যাসিস্ট দোসরদের বলে দিতে চাই, আমরা যদি বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট ও খুনিদের কোনো উৎপাত লক্ষ্য করি ছাত্র-জনতা ৫ আগস্টের মতো ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করবে।