-
রফিকুল আলম কাওসার, স্টাফ রিপোর্টার
-
বাংলাদেশের চা শিল্পে প্রথম নারী চা নিলামকারী হিসেবে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মায়িশা রহমান। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম প্রডিউস ব্রোকারস লিমিটেডে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করছেন। চা টেস্টিং এবং নিলাম পরিচালনার মতো চ্যালেঞ্জিং কাজ দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করে তিনি চা শিল্পে এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।
-
মায়িশা জানান, চা টেস্টিং এবং নিলাম পরিচালনা যতটা আকর্ষণীয় শোনায়, ততটাই জটিল। প্রতিটি চায়ের নমুনা বাগান থেকে আসার পর তার গুণগত মান যেমন গন্ধ, স্বাদ এবং নমুনার ভিত্তিতে যাচাই করা হয়। এর পর নমুনা গ্রেডিং, রেটিং এবং মূল্য নির্ধারণের কাজ করতে হয়। এসব নমুনা টি ট্রেডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (TTAB) নিবন্ধিত ক্রেতাদের কাছে নিলামের পূর্বে প্রেরণ করা হয়।
-
চট্টগ্রামের চা নিলাম কেন্দ্রে প্রতি সোমবার মায়িশা ক্রেতাদের সামনে চায়ের দরদাম চূড়ান্ত করেন। নিলামে চা বিক্রি চূড়ান্ত হওয়ার পর হাতুড়ি পিটিয়ে চায়ের বিক্রি নিশ্চিত করেন তিনি। এছাড়াও, চা বাগানের কারখানায় চায়ের গুণগত মান পর্যবেক্ষণেও তাকে নিয়মিত সময় দিতে হয়।
-
মায়িশা তার বাবা আহমেদুর রহমান সেলিমকে চা শিল্পে অনুপ্রেরণার প্রধান উৎস হিসেবে উল্লেখ করেন। চট্টগ্রাম প্রডিউস ব্রোকারস লিমিটেডের পরিচালক এবং দেশের অন্যতম সিনিয়র চা পরীক্ষক ও নিলামকারী আহমেদুর রহমানের হাত ধরে মায়িশা শৈশবেই চা শিল্পের নানা দিক সম্পর্কে জানার সুযোগ পান।
-
২০২২ সালে প্রথমবারের মতো নিলামের আসনে বসে তিনি চায়ের লট বিক্রি করে ক্রেতাদের কাছ থেকে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেন। সেই মুহূর্ত তার আত্মবিশ্বাসকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। পরিবার এবং ক্রেতাদের অনুপ্রেরণায় চা শিল্পে তার পথচলা এখন আরও দৃঢ় এবং গতিশীল।
-
মায়িশার জন্ম শ্রীমঙ্গলে। তার দাদা মোখলেসুর রহমান ছিলেন নন্দরানী ও শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের ম্যানেজার। পারিবারিক ঐতিহ্য এবং তার বাবার হাত ধরে গড়ে ওঠা চায়ের প্রতি ভালোবাসা মায়িশাকে চা শিল্পে অবদান রাখতে অনুপ্রাণিত করেছে।
-
বাংলাদেশের চা শিল্পে নারীদের সম্পৃক্ততার এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে মায়িশা রহমান শুধু একজন পথিকৃৎ নন, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নারীদের জন্যও একটি প্রেরণা।
বাংলাদেশের প্রথম নারী চা নিলামকারী মায়িশা রহমান: চা শিল্পে নতুন দিগন্তের যাত্রা
শেয়ার করুন