সারা দেশের ন্যায় কুলাউড়ায় ঈদের আনন্দকে মলিন করে দিলো সর্বনাশা মনু


শেখ নিজামুর রহমান টিপু : ঈদের আগে আকস্মিক টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সিলেট, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউডা উপজেলার হাজীপুর . শরীফপুর ও ঠেলাগাঁও ইউনিয়নে সবকটি গ্রাম ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গবাদি পশুর মৃত্যুসহ বাড়িঘর ও অনেক ফসলজমি নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানা যায়।
প্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়, দু’দিনের টানা বৃষ্টি এবং ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে মৌলভীবাজারের মনু এবং ধলাই নদীর পানি দ্রুত বেড়ে যায়। নদীর প্রতিরক্ষা বাধ ভেঙে আউশ ফসল ও সবজি ক্ষেতসহ ৫ ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো হাজার মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, মনু নদীর পানি বিপদসীমার ১৭৫ সেন্টিমিটার এবং ধলাই নদীর পানি ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে প্রতিরক্ষা বাঁধের অন্তত ২০টি এলাকা।

এদিকে পানি বেড়ে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামের ১১ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

মুহুরী নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ছাগলনাইয়া, সোনাগাজী ও ফেনী সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগেরদিন মঙ্গলবার দিনভর ভারী বর্ষণে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর ও বরইয়া অংশের দুটি বাঁধ ভেঙে অন্তত ১১ গ্রাম প্লাবিত হয়।

তবে প্রবল বর্ষণে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে, রামগড় ও দীঘিনালা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বন্যায় ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে সহস্রাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। খরস্রোতা ফেনী ও মাইনী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে খাগড়াছড়ি শহরের দুই-তৃতীয়াংশ, রামগড় ও মহালছড়ির বিস্তৃত অঞ্চল এবং দীঘিনালার মেরুং বাজার পানিতে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ নথি নষ্ট হয়ে গেছে। ভেসে গেছে কয়েকশ পুকুরের মাছ। রেড ক্রিসেন্ট ও যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে আটকেপড়া লোকজনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।

এছাড়াও হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে হবিগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ। মঙ্গলবার বিকাল থেকে নদীতে পানি বাড়তে থাকে। রাত ১১টা থেকে খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহিদুল ইসলাম জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেখানকার পানি নেমে খোয়াই নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি আরো বাড়বে বলেও জানান তিনি।

 

শেয়ার করুন