—সুহেল ইবনে ইসহাক
সহপাঠী দের মধ্যে সে ছিল দীর্ঘদেহী, সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল, বন্ধুসুলভ দুষ্টুমিতে ছিল পাকা, তথাপি খুবই নম্র-ভদ্র । স্কুলের নিয়মিত এসেম্বলিতে পেছনে থাকলে-ই হলো, হাসি-ঠাট্টাতে মাতিয়ে রাখতো সবসময় । লম্বা বলে তাকে লাইনের পেছনে দাঁড়াতে হতো । সহপাঠীদের মধ্যে এক একজন আজ এক এক জায়গায় প্রতিষ্ঠিত । অথচ আমাদের বন্ধুটি জীবনের চাকা চালাতে গিয়ে এখনো অনেক পেছনে রয়ে গেছে । জীবন যেখানে অসহায়, স্বপ্নও সেখানে মূল্যহীন। তবে অদম্য সাহসীরা সবসময় একটু আলাদা, কিন্তু সেই নির্ভীক সাহসী স্বপ্ন আজ ভেংগে যাওয়ার পথে।
ছবিতে প্রাণবন্ত যে মুখটি প্রিয়/শ্রদ্ধেয় স্বজনেরা দেখতে পাচ্ছেন, সে আমাদের হতভাগা সেই প্রিয় বন্ধু ও একজন পিতা ।
জ্বী পাঠক, বলছিলাম আমাদের বন্ধু, বিয়ানীবাজারের খলিল চৌধুরী আদর্শ বিদ্যানিকেতনের আমাদের সময়ের সহপাঠী খাসা শহীদ টিল্লা নিবাসী মৃত সুলেমান খাঁন এর পুত্র আলমগীর হুসেন খাঁন(৩৭)এর কথা ।
আলমগীর হোসেন দীর্ঘ দিন ধরে ভাগ্যের নির্মম নিষ্ঠুরতায় লড়াই করতে হচ্ছে কঠিন ব্যাধি ব্রেন টিউমার এর সঙ্গে। অথচ কিছুদিন আগেও ওর সঙ্গে তার একমাত্র ছোট্ট সোনামনি সহ পরিবার ও সমাজের সবাই কতোইনা মধুর দিন কাটিয়েছিল, হাসিখুশি প্রাণোচ্ছল ভাবে কেটেছিল তার প্রতিটি মুহূর্ত। ফুলফুটে এই অবুঝ বাচ্চাটি কি জানে তার প্রিয়তম বাবা আজ কঠিন রোগে আক্রান্ত? একসময় যে পুরো বন্ধুমহল মাতিয়ে রাখতো, অথচ আজ আমাদের প্রিয় বন্ধুটির এহেন অবস্থা । সত্যি খুবই খারাপ লাগছে , চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি পড়ছে বন্ধুটির জন্য ।
চিকিৎসার জন্য তার প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। তাঁর প্রবাসী গ্রামবাসী, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবার কতৃক কিছু টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে । ডাক্তারের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাঁকে ভারতে নিয়ে যেতে হবে ।
তার কোলে রয়েছে ১৬ মাসের ফুট ফুটে কন্যা সন্তান।উল্লেখ্য, আলমগীর খলিল চৌধুরী আদর্শ বিদ্যানিকেতনের ১৯৯৬ সালের এস.এস.সি ব্যচের ছাত্র ছিল।বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। পরে শরীরের অবস্থা আরো খারাপ হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাই ভেলুর সি.এম.এইচ. হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ।সেখানকার ডাঃ বলেন তাকে বাঁচাতে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা প্রয়োজন।আলমগীরকে বাঁচাতে তার পরিবারের পক্ষে এই টাকা ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব না।আলমগীর আরো সবার মত সুস্থ শরীর নিয়ে বাঁচতে চায়। তাই সমাজের বিত্তশালী মানুষের কাছে আলমগীরের আকুল আবেদন আর্থিকভাবে সাহায্য সহযোগিতার।
সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে যতভাবে সম্ভব সাহায্য করছে। আমরা সবাই কি পারিনা এই দু:সময়ে আলমগীরের পাশে দাঁড়াতে, তার মনে একটু সাহস যোগাতে?আমরাকি পারিনা একটি স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে দিতে? আপনার- আমার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াসে অনেক বড় ভীত তৈরি করা সম্ভব, সেখানে ১৮ লক্ষ টাকা এত বড় কিছু নয়। তার মনে কি আমরা এইটুকু আশ্বাস জোগাতে পারিনা যে, আমরা আমাদের বন্ধুকে, একজন পিতাকে, একজন সম্ভাবনাময় তরুণকে, একজন প্রতিবেশীকে সর্বোপরি একজন মানুষকে বিনা চিকিৎসায় হারিয়ে যেতে দেবো না । আর মানবিক দিক হতে আমরা কখনোই দুর্বল নই, যা বার বার প্রমাণিত ।
ব্যাংক হিসাব- আলমগীর হোসেন খান, হিসাব নং ১৫৮.১০১.২৩৩, ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, বিয়ানীবাজার শাখা।
প্রয়োজনে ০১৭৩৮৬০৯৯৪০। আমরা যারা ওর সহপাঠী, মোটামুটি তাদের অনেকের সাথে যোগাযোগ হয়েছে । সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে যতভাবে সম্ভব সাহায্য করবে বলে আশ্স্বস্ত হয়েছি । শেষ কথা কি হবে জানিনা। কতটুকু পারবো তাও জানিনা। তারপরও শেষ চেষ্টা আমাদের কাছে এটাই।