স্টাফ রিপোর্টার॥ পর্যটন জেলা হিসেবে খ্যাত ও দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলা জুড়ে এবার ৫৪ হাজার ১২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়ে এ পর্যন্ত কৃষকের গোলায় উঠেছে ৭২ শতাংশ। বিগত কয়েক বছরের এই হারানো ধানের রেস কাটিয়ে এবার মনের মত গোলায় সোঁনালী ধানের মুখ দেখতে পেরে হাওর অঞ্চলের কৃষকেরা বেজায় খুশি। তারা ভাবছেন আবহাওয়া যদি অনুকুলে থাকে তবে অবশিষ্ট ২৮ শতাংশ ধান কেটে নিজেদের ঘরে উঠানো সময়ের ব্যবধান মাত্র।
কয়েক বছর পর মৌলভীবাজার জেলার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি থেকে শতভাগ ধান কৃষকের ঘরে গেল এবার। অন্যান্য হাওর থেকে কম বেশি ধান কাটা গেলেও কাউয়াদীঘি হাওরে ধান কাটা বাকি এখনো ৪০ ভাগ। এ হাওরের নি¤œাঞ্চলের ধান ধীর গতীতে পাঁকতে থাকায় এই অবস্থা হয়েছে বলে কৃষকেরা জানিয়েছেন। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে কাউয়াদিঘীতে ২৫ শতাংশ ধান এখনো অবশিষ্ট রয়েছে। মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শাহজাহান বলেছেন, জেলায় গড়ে এ পর্যন্ত ৭২ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। হাওরাঞ্চল থেকে ৯৭ শতাংশ, হাওরের অন্যান্য ছোট-মাজারি বন্দ থেকে ৫৫ শতাংশ ধান গোলায় উঠেছে। জেলায় মোট ৫৪হাজার ১২ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন করা হয়েছে। এবার বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি ধান কাটতে পেরেছেন কৃষকেরা।
তবে, গেল ৩/৪ দিনের কালবৈশাখী ঝড়ে অবশিষ্ট ধান কাটতে ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা জুড়ে অবস্থিত কাউয়াদীঘি হাওরের কৃষকেরা। কৃষকেরা মনে করছেন লাগাতার আরো দু-একদিন এভাবে ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকলে অবশিষ্ট পাঁকা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।
রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের সফল কৃষক জাকির হোসেন বলেন, হাওরে এ পর্যন্ত ৫০ ভাগ ধান কাটা বাকি। তার ৪৫ কিয়ার জমির ২০ কিয়ার ধান এখনো কাঁচা। প্রতি কিয়ার থেকে গড়ে ১৫ মন উঠানো যাচ্ছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে ফলন কম হয়েছে ২৮ জাতের ধান। ব্লাষ্ট রোগের (মরকি) কারণে প্রতি কিয়ার থেকে ২৮ জাতের ধান গড়ে ৩/৪ মন উঠানো যাচ্ছে। এছাড়াও বৈরি আবহাওয়ার কারনে ফসল তুলতে বিলম্ব হচ্ছে বলে এ প্রতিবেদকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ বাদলি থাকায় অবশিষ্ট ধান কাটা যার (যাচ্ছে) না”। “এরকম মেঘ-তোফান থাকলে অবশিষ্ট ধান নষ্ট হইযিব”(হবে)। হাওর পাড়ের বেতাহুনজা গ্রামের কৃষক তছির উদ্দিন বলেন, তিনি ৮/১০ কিয়ার জমি চুক্তি বাগি (দত্তক) দিয়ে শতভাগ ধান ঘরে তুলেছেন এবার।