মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু-গ্রুপের সংঘর্ষে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতিসহ উভয় পক্ষে ১৪ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের সেক্রেটারীসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। যদিও পুলিশ বলছে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে।
১৪মে সোমবার দুপুরের দিকে কমলগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ ক্যাম্পাসে এঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্বিগবিদ্বিক ছুটাছুটি করতে থাকে।
আতংক গ্রস্ত ছাত্রীদেরকে কান্না করতে থাকে। নিরাপত্তার অভাবে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করতে না চাইলে বিকেলের পরীক্ষা বাতিল করা হয়। উভয় গ্রুপ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা করে দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ দুই ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করেছে। গুরুতর আহত কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হাকিম রাজ ও ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন মুন্নাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, সোমবার দুপুরের দিকে কমলগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ গেইটে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ছাত্রলীগের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাকের আলী সজিব গ্রুপের মুন্না, নাইম, নাহিদসহ আরও কয়েকজনের সাথে সভাপতি রাহাত ইমতিয়াজ রিপুল গ্রুপের রাফি’ টিপু ও সায়েমের কথাকাটির এক পর্যায় সংঘর্ষ বাঁধে। মুহুর্তেই সংঘর্ষ পুরো কলেজ ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষ লাঠিসোঠা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।
খরব পেয়ে কমলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক চম্পক ধাম এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
সংঘর্ষে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রুপের কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হাকিম, রাফি, সাইফুর রহমান টিপু, সোহাগ, নয়ন তানভীর, সামাদ, জয় ও সাফি আহত হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগ সম্পাদক গ্রুপের সাব্বির হোসেন মুন্না, নাইম, নাহিদ, কামরুল ও রফি আহত হন।
সভাপতি গ্রুপের আহত কর্মী রাফিকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সম্পাদক গ্রুপের আহত সাব্বির হোসেন মুন্নার বড় ভাই ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন পান্না ও তার সহযোগীরা হাসপাতালে গিয়ে রাফি ও হাকিমের উপর হামলা করে। হামলার সময় একাদশ শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষা মাত্র শেষ হয়। হামলা দেখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্বিকবিদ্বিক ছুটাছুটি করতে থাকে।
আহত আব্দুল হাকিম ও রাফি বর্তমানে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সাব্বির হোসেন মুন্না সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এব্যাপারে কমলগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মিঞা বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ন অপ্রত্যাশিত। গভর্নিং বডির সভায় আলোচনা করে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে পুলিশকে অবগত করা হলেও তারা আসতে দেরী করে। যদি পুলিশ সময়মতো আসতো তাহলে বিষয়টি বড় হতো না।
কমলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক চম্পক ধাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,মূলত মেয়ে সক্রান্ত বিষয় নিয়ে এই সংঘর্ষ।পরিস্থিতি এখন শান্ত। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাত্রলীগ সেক্রেটারী সাকের আলী সজিবসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাহাত ইমতিয়াজ রিপুল বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক সাকের আলী সজিব ও জাকির হোসেন পান্না পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক কলেজের পরিবেশ অশান্ত করার জন্য হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সম্পাদক সাকের আলী সজিব বলেন, ১৩মে রবিবার কলেজে ছাত্রদলের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। সোমবার উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাহাত ইমতিয়াজ রিপুল ছাত্রদলের কয়সর, জুলিসহ অন্যান্যদের সেল্টার দিয়ে ছাত্রলীগের মুন্না, নাহিদ, নাইমদের উপর হামলা করে।
তবে এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।