শ্রীমঙ্গলে সেই প্রসূতির নারীর নবজাতক সন্তানের নাম রাখলেন র‌্যাব কমান্ডার

  • শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি.
    প্রসবকালীন জটিলতায় জীবন সংশয়ে পড়া এক প্রসূতি নারীকে নিজের সরকারি গাড়িতে করে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দিয়েছিলেন র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। শুধু তাই নয়, শিল্পী রানি পাল নামের এই প্রসূতি নারীকে কোলে করে তিন তলার প্রসূতি ওয়ার্ডে নিয়ে যান এ র‌্যাব কর্মকর্তা। এনিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওযার পর দেশব্যাপী প্রশংসার ঝড় তোলে। পরবর্তীতে হাসপাতালে নিরাপদে পুত্র সন্তান প্রসব করেন ওই নারী। কৃতজ্ঞতা স্বরূপ পরের দিনই নারীর স্বামী রনজিত দাস এএসপি আনোয়ারকে ফোন করে নবজাতকের নাম ঠিক করে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
    ২৬এপ্রিল রাত১২টায় র‌্যাব কর্মকর্তা হাসপাতালে নেয়ার পর পুত্র সন্তান জন্মলাভ করেন। পুত্র সন্তান জন্মলাভের প্রায় এক সপ্তাহ পর (১মে) শুক্রবার ছিল নবাগত শিশুটির নামকরণের আনুষ্ঠানিকতা।
    র‌্যাব কমান্ডার যথাসময়ে মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল উপজেলা  শহরতলীর দক্ষিণ উত্তরসুর গ্রামে রনজিত দাসের বসতবাড়িতে হয়ে শিশুটির নাম শচীন চন্দ্র দাস রাখেন র‌্যাব কর্মকর্তা। তারঅনুরোধে কোনরকম আনুষ্ঠানিকতা ব্যতীতএকেবারে ঘরোয়াভাবে সম্পন্ন হয় নামকরণের প্রথা। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি ওই বাড়ির কাউকে বাইরে আসতে দেননি, এমনকি তিনি নিজেও যাননি ঘরের মধ্যে। দরজার সামনে উঁকি দিয়ে তিনি বাচ্চাটির নামকরণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। এ সময় তিনি নবজাতকের হাতে একটি কলম তুলে দেন এবং তার মায়ের জন্য কিছু উপহারসামগ্রীও হস্তান্তর করেন।
    নবজাতকের মা শিল্পী রানী পাল বলেন, স্যার যে আমাদের বাড়িতে এসে আমার সন্তানের নাম রেখে গেলেন, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার। আমি চাই, আমার ছেলে বড় হয়ে যেন স্যারের মতোই একজন মানুষ হয়।
    নবজাতক বাচ্চাটির নাম শচীন চন্দ্র দাস রাখার কারন সম্পর্কে জানতে চাইলে র‌্যাব কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, উপমহাদেশের বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ শচীন দেব বর্মনের একজন বড় ভক্ত আমি। তাছাড়া ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারের খেলা দেখতেও অনেক পছন্দ করতাম সেই ছোটবেলা থেকে। এই দু,জনের মহাগুণী মানুষের নামের সাথে মিলিয়েই শিশুটির নাম রেখেছি আমি। তিনি আরও বলেন, ছেলেটি বড় হয়ে কি হবে-  না হবে, অনেক পয়সাওয়ালা বা জ্ঞানীগুণী হবে কিনা, তা নিয়ে আমার কোন চাওয়া নেই। শুধু চাই, সে যেন একজন মানুষ হয়। মানবজাতি এবং অন্য সকল সৃষ্ট জীবের প্রতি গভীর ভালবাসা বুকে ধারণ করেই যেন সে বেড়ে ওঠে- মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট নবজাতকের জন্য এটাই আমার দোয়া।

     
    প্রসঙ্গত:করোনা পরিস্থিতি সৃষ্টির পর এএসপি আনোয়ার তার মানবিক কাজের মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন। তিনি ৩৪ তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। তিনি খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন উত্তর বড়বিল গ্রামের আব্দুল মান্নান ও বিলকিস বেগম দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে তৃতীয়।

শেয়ার করুন