এ.জে লাভলু, বড়লেখা :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীসহ আরও দুজন করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হয়েছেন। তারা বাড়িতে আইসোলেশনে (আলাদা) থেকেই সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। নমুনা পরীক্ষায় পরপর দুবার তাদের করোনা নেগেটিভ এসেছে। বুধবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এই তথ্য জানিয়েছে। তাদের দুজনকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে করোনামুক্ত বলে ঘোষণা দেওয়া হবে।
এর আগে গত ৯ মে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম এক যুবক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছিলেন। এই নিয়ে উপজেলায় মোট তিনজন করোনামুক্ত হয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ এপ্রিল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে বড়লেখা থানার এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) স্ত্রীর (৩২) করোনা শনাক্ত হয়। ওই নারীর মধ্যে করোনার উপসর্গ জ্বর ও গলাব্যাথা ছিল। পরে উপজেলা প্রশাসন তাঁর বাসা লকডাউন করে। এরপর তিনি বাসাতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ও গরম পানি খেয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন।
অন্যদিকে গত ৫ মে উপজেলা দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের গাংকুল গ্রামে উপসর্গবিহীন আরও এক নারীর (৩৫) করোনা শনাক্ত হয়। এর আগে গত ২৪ এপ্রিল ওই নারীর স্বামী সিলেট সিলেটের শামসুদ্দিন হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেও তাঁর করোনা নেগেটিভ আসে। পরে প্রশাসন ওই ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ মৃত ব্যক্তির স্ত্রীসহ তাঁর পরিবারের চারজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সিলেট ল্যাবে পাঠায়। পরে ওই নারীর করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তিনি বাড়িতে আইসোলেশনে থেকেই কোনো চিকিৎসা ছাড়াই শুধু গরম পানি খেয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন।
বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রত্নদ্বীপ বিশ্বাস বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীসহ দুই নারী করোনমুক্ত হয়েছেন। তাদের নমুনা পরীক্ষায় পরপর দুবার করোনা নেগেটিভ এসেছে। সুস্থ হওয়া দুজনের মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর মধ্যে করোনার উপসর্গ ছিল। তিনি বাড়িতেই আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ খেয়েছেন। গরম পানি খেয়েছেন। আর সুস্থ হওয়া অন্য নারীও বাড়িতে আইসোলেশনে ছিলেন। তাঁর মধ্যে করোনার কোনো উপসর্গ ছিল না। একারণে তিনি কোনো ওষুধ খাননি। তবে তিনি গরম পানি খেয়েছেন। তারা আইসোলেশনে থাকলেও সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ-খবর রাখা হয়েছে। তাদের আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে করোনামুক্ত বলে ঘোষণা দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বড়লেখা উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম আক্রান্ত যুবক ও দুই নারীসহ মোট তিনজন সুস্থ হয়েছেন। অন্য আক্রান্তদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনজন চিকিৎসক ও একজন ওয়ার্ডবয় রয়েছেন। তিন চিকিৎসক হাসপাতালের কোয়ার্টারে আইসোলেশনে রয়েছেন। এছাড়া আক্রান্ত অন্য ৪জন নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। প্রশাসন তাদের বাসা ও বাড়ি লকডাউন করে রেখেছে।