মৌলভীবাজারে নতুন করে আরও ৩৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন

  • মৌলভীবাজারে করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন করে আরও ৩৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৬৫ জন। ঢাকা ও সিলেট পিসিআর ল্যাবে পাঠানে সন্ধেহবাজনদের শরিরে পাঠানো নমুনা অপেক্ষমান রয়েছে আরও প্রায় সাড়ে ৮’শ রিপোর্ট। রিপোর্টের ধীরগতির কারণে আক্রান্তরা করোনার সংক্রামন ছড়াচ্ছেন।
    শনিবার ২০ জুন সন্ধ্যায় জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ তৌউহীদ আহমদ জানান, নতুন আক্রান্ত ৩৪ জনের মধ্যে মৌলভীবাজার সদর ২২ জন, রাজনগর ১ জন, কুলাউড়া ৪ জন, কমলগঞ্জ ২ জন, শ্রীমঙ্গল ৫ জন।
    বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, করোনা সন্ধেহবাজনরা নমুনা দেয়ার পর ফ্রি ষ্টাইল চলাফেরা করেন। এমনকি রিপোর্ট আসার পরও ফ্রি ষ্টাইলে চলাফেরার অভিযোগ রয়েছে। এর মূল কারণ হিসেবে দায়ি করছেন অনেকেই বিলম্বে রিপোর্ট পাওয়াকে। এতে করে প্রতিদিন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রামন ছড়াচ্ছে।
    গত ১০ জুন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের হিলালপুর গ্রামের সিএনজি চালক মোস্তফা মিয়া করোনা সন্দেহে শরির থেকে নমুনা দেন। ১৬ জুন আসা রিপোর্টে তার করোনা পজেটিভ আসে। তিনি নমুনা দেয়ার পর থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশা চালান ও যাত্রী পরিবহন করেন। এমন তথ্য জানিয়ে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন।
    আক্রান্ত সিএনজি চালক অনবরত আড্ডা দিয়েছেন বিভিন্ন চায়ের দোকানে। এমনকি সেলুনে গিয়ে চুল দাঁড়ি পর্যন্ত কেটেছেন। পরে তাকে নিজ বাড়িতে ঢুকিয়ে বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি যাতে করে বাড়ির বাহিরে বের না হতে পারেন সে ব্যাপারে নজরদারী করতে আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতায় ভলেন্টেরিয়ান নিয়োগ করেছি।
    মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ তৌউহীদ আহমদ জানান, এই রকম দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করোনা বিরুদ্ধে আমাদের কাজকে কঠিন করে দিচ্ছে। এই রকম ঘটনা যেনো আর না ঘটে তাই প্রশাসনের কঠোর হওয়া প্রয়োজন।
    মৌলভীবাজার পৌর সভার মেয়র জানান, করোনার পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে ৫ থেকে ৯ দিন লেগে যায়। অনেক রিপোর্ট এখনও আসেনি। বিলম্বে রিপোর্ট আসায় করোনার সংক্রামন দ্রুত ছড়াচ্ছে। তিনি মৌলভীবাজারে দ্রুত পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবী করেন। পাশাপাশি তিনি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিনের কাছে ই-মেইল পাঠিয়েছেন। বর্তমানে ঢাকার মহাখালিস্থ ‘নিপসম’ নামীয় সিসিআর ল্যাব থেকে করোনার পরীক্ষা করে আনা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি একদিন পর রিপোর্ট পাঠিয়ে দিচ্ছে।
    এছাড়াও তিনি জানান মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংকট রয়েছে। অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিষয়ে আবুল খায়ের গ্রুপের সাথে কথা হয়েছে তারা পৌর সভার কাছে ২/১দিনের মধ্যে ২৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠাবে। আসলেই সিলিন্ডার গুলো সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দিবেন।
    মৌলভীবাজার জেলায় মোট ২১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ৮৫ জন, করোনায় মৃত্যুবরণ করেন ৫ জন ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের।
    মৌলভীবাজার জেলায় মোট আক্রান্ত দাঁড়িয়েছে ২৬৫ জনে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৮৫ জন। 
শেয়ার করুন