প্রতিবেদন,এম.মুসলিম চৌধুরী:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল হাইল হাওর থেকে সংগ্রহ করা জলজ ফল মাখনা যাচ্ছে ঢাকা শহরে। মাখনা মিঠা পানির কাঁটাযুক্ত এক প্রকার ফল। স্থানীয়রা ফলটিকে (ফুকল) ফল নামে ছিনেন। স্থানীয়দের কাছে এ ফলের চাহিদা কম হলেও ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বিশেষ করে পুরান ঢাকার মানুষের কাছে রয়েছে এ ফলটির ব্যাপক চাহিদা।
শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওর থেকে মাখনা সংগ্রহ করে ৩ যুগের বেশি সময় ধরে ঢাকায় পাঠিয়ে আসছেন শহরতলীর লালবাগ এলাকার আবুল মিয়া ও সামছুদ্দিন। তাঁরা জানান, এর আগে আরও অনেকেই হাইল হাওরের মাখনা ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। হাওরে মাখনার ফলন কমে যাওয়ায় বর্মানে তাঁরা ৪/৫ জন মাখনা ব্যবসায় ঠিকে আছেন। মাখনা বছরের চৈত্র ও বৈশাখ মাসে হাওড়ে পাওয়া যায়। এই জলজ ফলটি কালো রঙের হয়ে থাকে। সুচালো কাঁটা যুক্ত ফলটি চামড়া ছাড়ালে ভিতরে থাকা কালো বীজ বের হয়। সেই কালো বীজের ভিতরে থাকা সাদা অংশই খেতে হয়। বিশেষজ্ঞরা জানান, মাখনা এক প্রকারের জলজ ওষুধি উদ্ভিদ। ওষুধি গুণসম্পন্ন এই উদ্ভিদের বীজটি শারীরিক বলবর্ধক এবং কামোত্তেজক। এ ফলের পাতা বাত রোগের জন্য উপকারী ।
টানা দুই থেকে আড়াইমাস হাওর পারের মানুষের কাছ থেকে মাখনা সংগ্রহ করে ঢাকার সদরঘাট ও জিনজিরা এলাকার বিভন্ন আড়তে পাঠান ব্যবসায়ীরা। আড়তদারদের হাত ধরে রাজধানীর বিভিন্ন অলি-গলিতে বিক্রি হয় মাখনা। ফলটিতে সূচাল কাঁটা দিয়ে জড়ানো থাকায়, খালি হাতে ধরতে চাইলে যেকোনো সময় হাতে কাঁটা বিধে যেতে পারে। যারা এই ফলটি পানি থেকে তোলেন তারা বাঁশের তৈরি এক ধরণের চিমটা ব্যবহার করেন।
রোববার শ্রীমঙ্গলের হবিগঞ্জ রোডের শাহী ঈদগাহের সামনে চোখে পড়ে এই ফলটি বস্তা থেকে বের করে টুকরিতে ভরে প্যাকিং করছেন কয়েকজন। তাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, প্রতিদিন ১৫/২০ টুকরি মাখনা ঢাকায় যায়। প্রতি টুকরি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করে থাকেন। আগে এ ব্যবসার সাথে ১৫/২০জন জড়িত ছিলেন। ১৫০/২০০ টুকিরি পর্যন্ত মাখনা পাঠাতেন ঢাকায়। হাওরের পরিধি কমে যাওয়ায় অন্যান্য জলজ ফলন ও উদ্ভিদের ন্যায় মাখনার ফলনও কমে এসেছে।