মোঃ শফিকুল ইসলাম দুলাল,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ওরাঁও সম্প্রদায়ের কারাম পূজা ও সামাজিক উৎসব। পরিবারের সুখ-শান্তির জন্য ও নিজেদের সুস্থতায় “কারাম” নামের একটি বিশেষ বন্দনার মধ্য দিয়ে ওরাঁও সম্প্রদায়ের লোকজন এই উৎসব পালন করে। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, ঠাকুরগাঁও কারাম পূজা উদযাপন কমিটি ও ইএসডিও’র প্রেমদীপ প্রকল্পের আয়োজনে সোমবার রাতে সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের পাঁচপীরডাঙ্গা গ্রামে ওরাঁওদের এই উৎসব শুরু হয়। জেলা পরিষদ, সদর উপজেলা প্রশাসন, ইএসডিও’র প্রেমদীপ প্রকল্প ও ঠাকুরগাঁও কারাম পূজা উদযাপন কমিটির আয়োজনে উৎসব উপলক্ষে আলোচনা সভায় ঠাকুরগাঁও কারাম পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষে আদিবাসী নেতা যাকোব খালকোর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, প্রধান অতিথি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রামকৃষ্ণ বর্মণ, গেস্ট অব অনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হিসাব ও অর্থ) লিজা বেগম, বিশেষ অতিথি ঠাকুরগাঁও সিনিয়র সহকারী জজ ও জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার এস এম শফিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এ্যাড. অরুনাংশু দত্ত টিটো, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমীর, রানীশংকৈল ডিগ্রী কলেজের অবঃ অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ফিরোজ কবির,সালন্দর ইউপি চেয়ারম্যান ফজলে এলাহী মুকুট চৌধুরী প্রমুখ। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ জেলা শাখার উপদেষ্টা ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. ইমরান হোসেন চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মোঃ শাহিন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, রাজনৈতিক ব্যক্তি, আদিবাসী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজন উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবছর ভাদ্রের শেষে এবং আশ্বিনের শুরুতে ওরাঁও জনগোষ্ঠী এই উৎসব আয়োজন করে। এই উৎসবে গাছ দেবতা যেন সামনের বছরে ভালো ফসল দেন সে প্রার্থনা করা হয়। এই গাছকে ঘিরে চলে আরাধনা গান। সব বয়সের আদিবাসী শিশু হতে কিশোর বৃদ্ধা হতে যুবক-যুবতীরা সবাই এই গানের সুরে সুর মিলিয়ে গাছ দেবতার প্রার্থনায় মেতে উঠে। গাছ দেবতার সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য ধান, সর্ষেদানা, কলাই, গম প্রভৃতি ফসলের বীজ এই কারাম গাছের গোড়ায় রাখা হয়। যেন গাছ দেবতা সামনের বছর ভাল ফলন দেন। সে প্রার্থনা করে রাতভর চলে এই সম্প্রদায়ের নৃত্যগীত ও হাড়িয়া পান। জেলার বিভিন্ন এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মালম্বীরাও এ উৎসবে যোগ দেন।